‘প্রথম থেকে নেগলিজেন্সির জন্যই আজ বাংলার এমার্জেন্সির থেকেও খারাপ অবস্থা’, আক্রমণ দিলীপের
“এমার্জেন্সির থেকেও খারাপ অবস্থা বাংলায়”। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তার বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার নিজেরা এই পরিস্হিতি সামলাতে ব্যর্থ অথচ মানুষের পাশে দাঁড়াতে গেলেও বিরোধী পক্ষকে বাধা দেওয়া হচ্ছে।তিনি বলেন, “ত্রাণ দিতে ওনাদের এমপি, এমএলএ, মন্ত্রীরা যাচ্ছেন অথচ আর আমরা যেতে গেলেই সংক্রমনের ভয়। আমাদের ক্ষেত্রে পুরোটাই রাজনৈতিক করে তুলছে।” একইসঙ্গে দিলীপ ঘোষ আরও দাবি করেন, রাজ্যপালের চাপেই তাঁকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি।নাহলে দলের বাকি সদস্যদের মতো তাকেও এতদিনে গ্রেফতার করা হত।
দিলীপ ঘোষ এদিন অভিযোগ করেন, ‘করোনা নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রথম থেকেই কিছুটা গা ছাড়া মনোভাব ছিল। যার চলতে আজকে বাংলাকে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এখন তো পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত। সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে এই রোগ।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও তাঁর স্ত্রী কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে এই খবর আসার পর থেকেই সস্ত্রীক হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন মন্ত্রী।
রাজ্যের করোনা সংক্রামিতের সংখ্যা উত্তরোত্তর নতুন রেকর্ড গড়ছে। বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার, ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের নতুন রেকর্ড ৩৪৪ জন। এর ফলে লাফ দিয়ে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল সাড়ে ৪ হাজার। তাই আরও ১৫ দিন রাজ্যে লকডাউনের সীমা বাড়ানোর ওপরও মন্তব্য করেন তিনি । তার মতে, “করোনা সংক্রমন রোধে প্রয়োজনে ১৫ দিন আরও বেশি লকডাউনের সীমা বাড়াতে হলে হবে। এখন বড় ধাক্কা আসছে , হু হু করে বাড়ছে সংক্রমন, তা সামলাতে গেলে লকডাউন বাড়ানো প্রয়োজন।”
পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে প্রবেশের জন্য রাজ্যে হু হু করে বাড়ছে সংক্রমন। ভিন রাজ্য থেকে যেসব শ্রমিকরা ফিরছেন, তাঁদের ৬০ শতাংশ-ই করোনা আক্রান্ত বলে সম্প্রতিই উল্লেখ করেছে নবান্ন। রাজ্য সরকারের এহেন দাবিকে নস্যাৎ করে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “সব রাজ্যেই পরিযায়ীরা ফিরছেন। তাদের জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। কিন্তু এই রাজ্যে কয়েকটা গাড়ি আসতেই নাকি করোনা মারাত্মক হারে বেড়ে গিয়েছে।”
পরিযায়ীদের ফেরানো নিয়ে তিনি বলেন, “৮ই মে উনি মহারাষ্ট্রকে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যের শ্রমিকদের ফেরানো নিয়ে। এবার যখন তা হচ্ছে, আপনারাই আবার আটকাচ্ছেন।” একইসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতির আরও অভিযোগ করেন, “সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলির অবস্থা দেখেছেন? কোনওরকম সুবিধা নেই ওখানে। খাবার , জল কিচ্ছু নেই। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ করছে মানুষ। মুর্শিদাবাদ, মালদা থেকে বহুল সংখ্যক মুসলিম ছেলেরা অন্য রাজ্যে পড়ে আছে, তাদের তো ভোটের সময় ভালোই ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেন। পঞ্চায়েত ভোটেও তো রিগিং করে জিতেছেন। তবে এখন তাদের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না কেন?” এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করে ছাড়েন দিলীপ ঘোষ।