‘লিখতে পারি না স্যার, শুধু সই করতে পারি’, বললেন অনুব্রত, কেষ্টকে দিয়ে বয়ান লেখাতে গিয়ে বেশ বিপাকে পড়লেন ইডি আধিকারিকরা

গরু পাচার মামলায় (cattle smuggling case) দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal)। সেখানে তাঁকে তিনদিনের ইডি হেফাজত দিয়েছেন বিচারক। দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে অনুব্রতকে। তাঁকে দিয়ে বয়ান লেখাতে গিয়ে এক বিপাকে পড়লেন ইডি আধিকারিকরা (ED officers)। অনুব্রতর দাবী, তিনি লিখতে পারেন না। এর জেরে বিকল্প কিছু ভাবতে হল তদন্তকারী আধিকারিকদের।
নিয়মে বলা রয়েছে, ৫০ পিএমএলএ অ্যাক্ট অনুযায়ী ইডি-র বয়ান রেকর্ড করে। এই আইনে বলা রয়েছে, অভিযুক্তকে কিংবা সাক্ষীকে অফিসারের সামনে নিজেকেই নিজের বয়ান লিখে দিতে হয়। তদন্তকারীরা আধিকারিকরা প্রশ্ন করেন আর অভিযুক্তকে লিখতে হয় উত্তর। এই গোটা প্রক্রিয়াটার ভিডিও রেকর্ড করা হয়। গতকাল ইডি হেফাজতের প্রথম দিনে অনুব্রতকে নিজের বয়ান নিজেকেই লিখতে বলা হয়। আর এর ফলেই বেশ ফ্যাসাদে পড়ে যান তিনি।
আসলে, অষ্টম শ্রেণীর পর আর পড়াশোনা করে নি অনুব্রত। সেভাবে পড়াশোনাতে আগ্রহও ছিল না তাঁর। ছোটো থেকেই খুঁজেছেন উপার্জনের রাস্তা। কখনও মুদির দোকানে কাজ করেছেন তো কখনও আবার মাছের ব্যবসা করেছেন। রাজনীতিতে আসার পর বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’ হয়েছেন তিনি। সেভাবে লেখা জিনিসটা কোনওদিন করতে হয়নি শুধুমাত্র ব্যাঙ্কের চেকবইয়ে সই করা ছাড়া। কিন্তু ইডি-র দফতরে গিয়ে যে তাঁকে পেন ধরতে হবে, তা কে জানত!
ইডি আধিকারিকদের মুখে বয়ান লিখতে বলার কথা শুনে এদিক-ওদিক চান অনুব্রত। তারপর বলেন, “আমি লিখতে পারি না স্যর। শুধু সই করতে পারি”। এর জেরে অনুব্রতর বয়ান কীভাবে লেখা হবে, তা নিয়ে বেশ ধন্ধে পড়ে যান তদন্তকারী আধিকারিকরা।
কীভাবে জেরা হবে তা নিয়েই একটা ছোট্ট বৈঠক করেন ইডি আধিকারিকরা। তারপর এক সিনিয়র আধিকারিকের নির্দেশে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মেনে একজন নিরপেক্ষ সাক্ষীকে নিয়ে আসা হয়। তিনি জেরা পর্বে অনুব্রতর দেওয়া উত্তর লিখেছেন। জেরা প্রক্রিয়ার শেষে অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর দেওয়া উত্তর পড়ে শোনানো হয়। সব ঠিক আছে বলে জানালে সেই কাগজের নীচে সই করেন কেষ্ট। এরপরও অনুব্রতর বয়ান এভাবেই নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।