West Bengal

অজানা জ্বরে কাবু রাজ্যের একাধিক শিশু, মৃত্যু ৮ মাসের একরত্তির, অথচ প্রশাসনের মতে, ‘পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক’

বিজ্ঞাপন

অজানা জ্বরে ভুগছে উত্তরবঙ্গের একাধিল শিশু। গতকাল, সোমবার রাতে ময়নাগুড়ি হাসপাতালে এই অজানা জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি করা হয়ে এক ৮ মাসের শিশুকে। করোনা পরীক্ষা নেগেটিভ আসে তার। গতরাত থেকে শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হলেও আজ বিকেলে মৃত্যু হয় শিশুটির। কিন্তু এই ঘটনার পরও টনক নড়েনি প্রশাসনের। তাদের দাবী, পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

বিজ্ঞাপন

এই ঘটনায় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার রাহুল ভৌমিক জানান যে ওই শিশুটির সবরকম পরীক্ষা করা হলে কিন্তু অনেক চেষ্টার পরও শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। অন্যান্য যে সমস্ত শিশুরা ভর্তি হয়েছে, তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে খবর। নমুনা সংগ্রহ চলছে। আজ, মঙ্গলবার ২৫ জন শিশুর নমুনা সংগ্রহ করে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জলপাইগুড়ির সিএমওএইচ জ্যোতিষচন্দ্র দাস জানান যে জেলার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। যে সমস্ত শিশুরা আক্রান্ত হয়েছে, তাদের লালারস, কফ ও অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেল, কিন্তু জলপাইগুড়িতে শিশুদের এই অজানা জ্বর নিয়ে কোনও যেন ভ্রূক্ষেপই নেই স্বাস্থ্য ভবনের। শতাধিক শিশু অসুস্থ। কিন্তু এরপরও এই জ্বরের কারণ অনুসন্ধানের জন্য কোনও বিশেষ দল পাঠানো হয়নি সেই জেলায়। এই নিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের একাংশই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

শিশুদের অসুস্থতা কেন যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না? এই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এই বিতর্কের পিছনে আরও কারণ রয়েছে। জানা গিয়েছে, শিশুদের রোগ ম্যানেজমেন্টের জন্য যাঁকে নিয়োগ করা করা হয়েছে সেই সুশান্ত রায় আদতে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। এই নিয়ে কার্যত একাংশের চিকিৎসকেরা বিস্মিত। স্বাস্থ্য ভবন কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়েও ধন্দে রয়েছে চিকিৎসক মহল।

নানা মহল থেকে নানান প্রশ্ন ওঠার পর মঙ্গলবার জানা যায়, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে নমুনা আনানো হচ্ছে। এখানেও উঠছে প্রশ্ন। সাত দিন পরে কেন নমুনা আনার কথা ভাবা হচ্ছে? আরও আগে কেন আনা হল না? যদি নতুন ধরনের ওই ভাইরাস বা প্রজাতির উদ্রেক ঘটে, সে ক্ষেত্রে তা অনুসন্ধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারেরও সাহায্য দরকার। কিন্তু সরকারি চিকিৎসকের একাংশের দাবী, এই গোটা বিষয়টি নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ পদক্ষেপ করা হয়নি। এই কারণে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, উত্তরবঙ্গে রোগের প্রকোপের মোকাবিলায় পদক্ষেপ করার প্রশ্নে স্বাস্থ্য ভবন কি কুণ্ঠা বোধ করছে?

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ি জেলার নানান ব্লকে গত এক সপ্তাহ ধরে শিশুদের মধ্যে এক অজানা জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে। শতাধিক শিশু এই জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। প্রায় সংজ্ঞাহীনের মতো পড়ে রয়েছে শিশুরা। জেলা হাসপাতাল তো বটেই গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতেও এই উপসর্গের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শিশু হাসপাতালের উপরও রোগীর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে শিশু মৃত্যুর জেরে গোটা জেলায় মারাত্মক উদ্বেগ ছড়িয়েছে।

বিজ্ঞাপন
Back to top button

Discover more from Khabor24x7

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading