‘চিরকুট দিয়ে কখনও চাকরি হয় না’, বামেদের সুরেই কথা ফিরহাদের, নিজের দলের লোকজনদেরই বিপদে ফেলে দিলেন তৃণমূল নেতা

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্য উত্তাল। শাসক দলের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে যুব নেতাদেরও নাম জড়িয়েছে এই দুর্নীতিতে। এর জেরে শাসকদলকে আক্রমণ করতে ছাড়ছে না বিরধিয়া। এমন আবহে এবার বাম আমল নিয়ে টানাটানি শুরু করেছেন তৃণমূল নেতারা। তাদের দাবী, এই দুর্নীতি চলে আসছে নাম জমানা থেকে।
বামনেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী-র চাকরি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। একটি সুপারিশপত্র প্রকাশ করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবী করেছেন, সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরি হয়েছিল বামেদের চিরকুটে চাকরির সুপারিশ তত্ত্বে। কিন্তু এবার এই দাবীকে সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁর মতে, চিরকুটের দ্বারা কখনও চাকরি দেওয়া যায় না।
এই চিরকুটে চাকরির প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, “আমার জানা নেই, ও কী পাগলের মতো বকেছে। এটা নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। কারণ, চিরকুটে কোনওদিন লোক ঢোকানো যায় না। অন্তত একটা অ্যাপ্লিকেশন লাগে।আগে যখন সার্ভিস কমিশন ছিল না, বা নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়ম ছিল না, তখনও আমাদের স্কুলগুলিতে দেখেছি, গভর্নিং বডি বসে শিক্ষক বাছাই করত। প্রধান শিক্ষিকা একটি প্যানেল তৈরি করতেন তিনজনের। সেটি সত্তরের দশকে দেখা যেত”।
বামেরা দাবী করেছিল, এই কাগজ পাঠিয়ে চাকরি সত্তরের দশকে হত। বাম আমলে তেমনটা হয়নি। আর সেই একই কথা শোনা গেল শাসক দলের নেতার গলাতেও। বামেদের কথায় সায় দিয়েই ফিরহাদ বললেন সত্তরের দশকে কাগজ পাঠিয়ে চাকরি হত কিন্তু রিক্রুটমেন্ট বোর্ড গঠন হওয়ার পর থেকে তেমনটা হয় না।
বামনেতা সুজন চক্রবর্তী আগে থেকেই বলে আসছিলেন যে রাজ্য শ্বেতপত্র প্রকাশ করে প্রমাণ করুক বাম আমলে কোথায় কার চাকরি হয়েছে। তাহলেই প্রমাণ হয়ে যাবে ২০১১ সালের আগে চাকরিতে নিয়োগে স্বচ্ছতা ছিল আর ২০১১ সালের পর নিয়োগে দুর্নীতি। বামনেতার দাবী, সেই ভয়েই তৃণমূল শ্বেতপত্র প্রকাশ করছে না। তবে ফিরহাদ যেমনটা দাবী করলেন, তাতে যে তাঁর দলের লোকজনই বেশ বিপাকে পড়ল, তা বলাই বাহুল্য।