‘আমিই সুজনের স্ত্রীর চাকরির সুপারিশ করে দিয়েছিলাম’, বাম আমলে চিরকুট বিতর্কের মাঝেই বিস্ফোরক দাবী প্রাক্তন বামনেতার

রাজ্য এখন নিয়োগ দুর্নীতি (recruitment scam) নিয়ে জর্জরিত। এরই মাঝে শাসক দলের তরফে দাবী তোলা হয়েছে যে বাম আমলে (CPM regime) চিরকুটের সুপারিশে অনেক চাকরি হয়েছে। এই নিয়ে বামনেতা সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakrborty) স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর চাকরি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সুপারিশের জেরেই তাঁর চাকরি হয়েছে বলে দাবী তৃণমূলের। যদিও সুজন চক্রবর্তী তা অস্বীকার করে জানিয়েছেন যে সাধারণ নিয়ম মেনেই তাঁর স্ত্রীর চাকরি হয়েছে।
এসবের মাঝেই এবার এক বিস্ফোরক দাবী করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলা সম্পাদক তথা পিডিএস নেতা সমীর পুত্তুন্ডু। এক সংবাদমাধ্যমে তিনি দাবী করেছেন যে সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরি তিনিই করিয়ে দিয়েছিলেন। তৎকালীন প্রভাবশালী বামনেতা হওয়ার দরুন সেই চাকরির সুপারিশ করে দেন তিনি। সমীরবাবু আরও দাবী করেন যে বাম আমলে এমন হাজার হাজার চাকরি হয়েছে।
সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরি প্রসঙ্গে সমীরবাবু বলেন, “আমি অস্বীকার করতে পারব না, আমি তখন জেলা নেতৃত্বে ছিলাম। আমি ১৯৮৫ সাল থেকে রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলাম। ৯৩ সাল থেকে জেলা সেক্রেটারি হয়েছি। এটা সে সময়েরই ঘটনা, সুজনের বিয়ের আগের ঘটনা। আমায় তখন বারবার ইনসিস্ট করেছিল, মিলির চাকরিটা হয়ে গেলে সুজনদের সুবিধা হবে। তখন গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে কাজের একটা সুযোগ ছিল। করে দিলাম”।
অন্য কারোর চাকরির ব্যবস্থাও কী করেছিলেন সমীরবাবু? তাঁর কথায়, “ওভাবে কি বলা যায় নাকি। কত লোকের চাকরি হয়েছে! সত্যসাধন চক্রবর্তী (প্রাক্তন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী) চেয়ারম্যান হবেন সে সময়ে, তাঁর সুবিধার জন্য করতে হয়েছে কিছু। ইউনিভার্সিটির সেনেট মেম্বার ছিলাম, সে সময়ে ইউনিভার্সিটি চালানোর জন্যও কিছু রিক্রুটমেন্ট হয়েছে। লোক নিতে হয়েছে প্রশাসনের কাজ চালানোর জন্য। এগুলো সব পার্টিই করে”।
প্রাক্তন বামনেতার কথায়, প্রশাসনের প্রয়োজনে ও অন্যের দরকারে নানা সময়ে নানা রিক্রুটমেন্ট করিয়েছেন তিনি। তবে এ জন্য কোনও টাকাপয়সার লেনদেন ছিল না বলেই দাবী তাঁর। তিনি এও জানান, “তখনও চাকরির বিনিময়ে টাকা নেওয়ার ব্যাপার চালু হয়নি। আমরা তো ২০০১-এ সিপিএম ছেড়ে দিয়েছি। তার পরে এইসব শুরু হয়েছে”।
বাম জমানায় কী তাহলে অনেক অযোগ্যদেরই চাকরি হয়েছে? সমীরবাবুর কথায়, তা হতে পারে তবে তিনি এও স্পষ্ট করে বলেন যে বর্তমান সরকার আরও অপদার্থ। তারাও সেই একই নিয়ম করবে বলে এগুলো সামনে আনতে চায়নি।
এই বিষয়ে বামনেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া যদিও এখনও জানা যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রীর চাকরি নিয়ে কোনও রকমের সুপারিশের কথা তিনি আগেই অস্বীকার করেছেন। কিন্তু এখন যখন প্রাক্তন বামনেতা নিজেই এমন দাবী করছেন, এবার সুজন চক্রবর্তী এর প্রেক্ষিতে কী বলেন, তা জানতে উৎসুক সকলেই।