ফের তুঙ্গে নবান্ন-রাজভবন সংঘাত! বিধানসভা অধিবেশনে ভাষণের খসড়াতে আপত্তি রাজ্যপালের, তলব মুখ্যমন্ত্রীর
রাজ্য বিধানসভা অধিবেশন আসন্ন। সেই অধিবেশনে রাজ্যপালের জন লিখিত ভাষণের খসড়া নিয়ে আপত্তি তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এই নিয়ে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত আরও বেশি প্রকট হল।
জানা গিয়েছে, অধিবেশনে রাজ্যপাল যে ভাষণ পাঠ করবেন, তার খসড়া রাজ্য মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হওয়ার পর রীতি মেনে রাজভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। সাংবিধানিক রীতি মেনে আগামী ২রা জুলাই রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে দুপুর দু’টোর সময় রাজ্যপালের তা পাঠ করার কথা। কিন্তু এই ভাষণের খসড়ায় কিছু লাইন নিয়ে আপত্তি রয়েছে রাজ্যপালের। এই বিষয়ে তাই মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে তলব করেছেন জগদীপ ধনখড়।
আরও পড়ুন- জগদ্দলে অর্জুন সিংয়ের বাড়ির সামনেই বিজেপি কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি, কাঠগড়ায় তৃণমূল
নবান্নের সূত্র অনুযায়ী, রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে তলব করলে সাংবিধানিক রীতি মেনে মুখ্যমন্ত্রী যেতেই পারেন, চা-ও খেতে পারেন। এতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু এই তলব যদি শুধুমাত্রই অধিবেশনের খসড়া পরিবর্তনের জন্য হয়, তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়া সম্বব নয়।
আসলে, সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী, রাজ্যপালের ভাষণ লেখে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারই। এরপর তা রাজ্য মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করে আইন মেনে রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়। এক্ষেত্রে নবান্ন সবরকম রীতি মেনে অধিবেশনের দু’দিন আগেই ভাষণের খসড়া রাজভবনে পাঠিয়েছে। তাই তা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
স্বাধীনতার পর বাংলায় আসা সমস্ত রাজ্যপালই রীতি মেনে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত লিখিত ভাষণ পাঠ করেছেন, এমনকী, বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও গতবছর রাজ্য সরকারের পাঠানো ভাষণই হুবহু পাঠ করেছেন। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও যে লিখিত ভাষণ অনুমোদন করে রাষ্ট্রপতিকে পাঠায় তিনিও তাই হুবহু পাঠ করেন বলে রীতি।
নতুন সরকারের বাজেট পেশের এই অধিবেশন শুক্রবার দুপুরে রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে শুরু হবে। প্রায় দু’সপ্তাহ চলবে এই বাজেট অধিবেশন।প্রথমদিন অর্থাৎ ২রা জুলাই রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াও দ্বিতীয় পর্বে ডেপুটি স্পিকার পদে রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্বাচিত করা হবে। এরপর ৭ই জুলাই নতুন সরকার বাজেট পেশ করবে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অসুস্থ থাকায় পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই বাজেট পড়তে পারেন। আগামী ৫ই জুলাই রয়েছে শোকপ্রস্তাব এবং ৬ই শুরু হবে জুলাই রাজ্যপালের ভাষণের উপর ধন্যবাদজ্ঞাপক বিতর্ক। তবে ৬ই জুলাই দ্বিতীয়ার্ধে আবার বিধানপরিষদ গঠন নিয়ে গঠিত কমিটির রিপোর্টের উপর প্রস্তাব আনা হবে।
আরও পড়ুন- একমাসের মধ্যেই চালু হবে ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
এর কারণ, গত ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই বিধানসভায় বিধানপরিষদের বিল পেশ করেন। সেই সময় এই বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনার জন্য স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ই একটা কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটির রিপোর্ট বিধানসভায় জমা পড়লেও তা পুস্তিকা আকারে এখনও বিধায়কদের মধ্যে বিলি করা হয়নি।