‘কেউ যদি ভাবে ভয় পেয়েছি, ভুল ভাবছে, মানুষ জবাব দিতে শুরু করেছে’, অবশেষে ৪২ দিন পর জামিন পেয়ে স্বমেজাজে নওশাদ

৪২ দিন পর জামিন পেলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তাঁর জেলমুক্তি হওয়ায় খুশির হাওয়া আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। এদিন প্রেসিডেন্সি জেল থেকে বেরিয়ে সকলকে ধন্যবাদ জানান নওশাদ। জেল থেকে বেরিয়ে রাজ্য প্রশাসনকে ফের একহাত নিতেও ছাড়লেন না আইএসএফ বিধায়ক।
এদিন প্রশাসনকে খোঁচা দিয়েই নওশাদ বলেন, “কেউ যদি ভাবে আটকে রাখায় ভয় পেয়ে গিয়েছি, তা ভুল হবে”। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে নওশাদ বলেন, “মানুষ জবাব দিতে শুরু করেছে। দুর্নীতি, অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে”।
এদিকে আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্যের ‘অপরাধে’ গ্রেফতার করা হয়েছে কংগ্রেস নেতা তথা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচিকে। সেই ঘটনা নিয়ে এখন রাজ্য উত্তাল। কৌস্তভের পাশে দাঁড়ান আইএসএফ বিধায়ক। নওশাদ বলেন, “কৌস্তভের পাশে আছি। লড়াই চলবে”।
রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার সরব হয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন তিনি। আজ, শনিবার প্রেসিডেন্সি জেলের বাইরে ভিড় জমান আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা। ফুল, মালা দিয়ে দলীয় বিধায়ককে বরণ করে নেন তাঁরা। জেল থেকে বেরিয়ে সোজা ফুরফুরা শরিফে যাওয়ার কথা নওশাদের। সেখানেও তাঁকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি চলছে।
জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে গ্রেফতার করা হয় আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে। নানান আইনি মারপ্যাচের জেরে ৪০ দিন জেলবন্দি থাকতে হয় তাঁকে। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে জামিন দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট রাজ্যকে জানায়, “ পুলিশকে সরাসরি মারতে বলেছেন নওশাদ সিদ্দিকি বা সরাসরি শারীরিক নিগ্রহের ঘটনায় যুক্ত তিনি, এই মর্মে এখনও কোনও ভিডিও ফুটেজ আমরা পাইনি”।
এদিকে আবার রাজ্য সরকারের তরফে আবেদন জানানো হয় যে জামিন পেলেও যাতে নওশাদ সিদ্দিকিকে নিউ মার্কেট থানা এলাকায় ১৫ দিন ঢুকতে না দেওয়া হয়। কিন্তু সেই আবেদনও খারিজ হয়ে গিয়েছে। আদালত জানিয়েছে যে নওশাদের কেস ডায়েরি থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে নওশাদকে। তদন্তকারী আধিকারিকরা ডাকলে যেতে হবে তাঁকে।
৬৫ জন মামলাকারীর মধ্যে ৬৪ জনের জামিনই কোনও শর্ত ছাড়াই মঞ্জুর করেছে আদালত। তবে বৃহস্পতিবার জামিন পেলেও শুক্রবার দিনভর প্রেসিডেন্সি জেলেই থাকতে হয় নওশাদকে। জেল সুপারের জানান, জেল লক-আপ বন্ধ হওয়ার আগে রিলিজ অর্ডার-সহ অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ার কারণেই জেলে কাটাতে হয়েছে নওশাদকে।