মুঘল সম্রাট শাহজাহান ‘বহিরাগত’ নন, বিতর্কিত টুইট করে ফের চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে জাভেদ আখতার
মুঘল সম্রাট শাহজাহান ‘বহিরাগত’ নন, তিনি এদেশেরই। এই বিষয় নিয়ে টুইটারে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন জনপ্রিয় গীতিকার ও কবি জাভেদ আখতার। আর এর ফলে ফের একবার চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলেন এও বলি-ব্যক্তিত্ব।
নিজের এই মন্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রসঙ্গ টেনে আনেন জাভেদ জি। আর এরপরই মাথাচাড়া দেয় বিতর্ক। নেট মাধ্যমে ব্যাপক ট্রোলিং-এর শিকার হন জাভেদ আখতার।
এই টুইটে ‘শাহজাহান’ প্রসঙ্গ নিয়ে বেশ ক্ষোভপ্রকাশ করতে দেখা যায় জনপ্রিয় গীতিকারকে। তিনি প্রশ্ন রাখেন যে ওবামা কেনিয়ার বংশোদ্ভূত হয়েও যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের জন্য দাঁড়াতে পারেন এবং শেষপর্যন্ত জিততে পারেন, তাহলে শাহজাহানের ক্ষেত্রে সেই একই বিষয় প্রযোজ্য নয় কেন? কেন তাঁকে ‘বহিরাগত’র তকমা দেওয়া হবে?
তবে শুধু এই বলেই থেমে থাকেননি ‘জাভেদ সাব’। টুইটে তিনি লেখেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার বাবা জন্মেছিলেন কেনিয়াতে। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র আমেরিকাতে জন্মেগ্রহণ করায় ওবামা মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে দাঁড়াতে পেরেছেন। অন্যদিকে, শাহজাহান ছিলেম মুঘল সাম্রাজ্যের পঞ্চম প্রজন্ম।তাঁর মা ও মাতামহ ছিলেন রাজপুত বংশের। সেই হিসেবে শাহজাহানের শরীরেও রাজপুত রক্ত রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই মুঘল সম্রাটের নামের সঙ্গে ‘বহিরাগত’ তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
Obama ‘s father was a Kenyan his paternal aunts still live in Kenya but since Obama was born in US he had the right to contest the presidential election Shah Jahan was the 5th Gen in India his grand mom n mom were Rajputni ( 75 %blood Rajput) but they call him a foreigner.
— Javed Akhtar (@Javedakhtarjadu) July 26, 2021
বিজ্ঞাপনআরও পড়ুন- নতুন সদস্য আসছে তনুশ্রীর পরিবারে, আশীর্বাদ চাইলেন সকলের কাছে
জাভেদ আখতারের এই টুইট নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। নেটিজেনদের বিরাট এক অংশ ট্রোল করা শুরু করেন এই বর্ষীয়ান গীতিকারকে। কেউ কেউ তো ট্রোল করতে গিয়ে সমস্ত শালীনতার গন্ডি পেরিয়ে ফেলেছেন। কেউ লেখেন, “ওবামাকে মানুষ ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু, শাহজাহান মানুষের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে গদিতে বসেননি। স্রেফ বংশানুক্রমিকভাবে সম্রাটের গদিতে বসেছিলেন তিনি”।
আবার কারোর মতে, “ওবামা নির্দিষ্ট গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জয়ী হয়ে আইন মেনে দেশ শাসন করেছিলেন। ওদিকে মুঘলরা সেসবের তোয়াক্কা না করে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো, রীতিমতো গায়ের জোরে দেশ শাসন করেছিলেন”।
এক নেটিজেন বলেন, “হিন্দু স্ত্রী থাকলেই কেউ দেশপ্রেমিক হয় না। মুঘলরা যেখানে এ দেশের মানুষের ওপর অকথ্য অত্যাচার করেছেন সেখানে কী প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ওবামা মার্কিন নাগরিকদের ওপর অত্যাচার করেছিলেন?”
অন্যদিকে আবার জাভেদ আখতারের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন বলি-পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীও। সরাসরি এই বর্ষীয়ান গীতিকারের নাম তুলে তিনি টুইট করে, ‘জাভেদ সাব, আপনি ভুল। ওবামা আমেরিকায় চার্চ ধ্বংস করেননি। কোনও মার্কিন বাসিন্দাকে জোর করে ধর্মান্তকরণের চেষ্টা করেননি। মুঘলরা কিন্তু সেসব ব্যাপক হারে করেছিল”।
Javed saab, you are wrong here. Obama’s parents or forefathers did not invade USA. Also, if you are equating Obama with Shahjahan, then Obama neither destroyed churches in US nor did he convert Americans to his belief with sword. Obama wasn’t a tyrant. It’s illogical logic. https://t.co/79yfFO94Le
— Vivek Ranjan Agnihotri (@vivekagnihotri) July 26, 2021
তবে কোনও বিতর্কে জড়িয়ে পড়া এটা জাভেদ আখতারের জন্য প্রথম নয়। এর আগেও তিনি নানা সময় ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন। নানান অশালীন ভাষা, কুরুচিকর কটূক্তি করা হয়েছে তাঁকে। এমনকি, তাঁকে ‘দেশদ্রোহী’র তকমাও পেতে হয়েছে এর আগে।
বিজ্ঞাপন