‘কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না’, রাজ্যের নানান দুর্নীতির মামলায় CBI-এর তদন্তে অখুশি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, ব্যক্ত করলেন হতাশা
তাঁকে একরকম নিজেদের মসিহা বলেই মেনে নিয়েছেন নানান বিচারপ্রার্থীরা। তাঁর কাছে গেলে সুবিচার মিলবেই, এমনটাই ধারণা সকলের। রাজ্যের একের পর এক দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের নির্দেশ তাঁর এজলাস থেকেই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ই নিজে হতাশ। কিন্তু কেন?
জানা যাচ্ছে, রাজ্যের নানান মামলার সিবিআই তদন্তে তিনি খুশি নন। সিবিআইয়ের তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে নিজের হতাশা ব্যক্ত করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকি, বিচারপতিকে এমনও বলতে শোনা গিয়েছে যে, অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষে তিনি আলো দেখতে পাচ্ছেন না। এমনকি সিবিআইয়ের থেকে সিট ভাল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আজ, মঙ্গলবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আদালতে বলেন, “ডজন খানেক সিবিআই তদন্ত শেষে নোবেল পুরস্কার হবে! মনে হচ্ছে সিবিআই-এর থেকে সিট ভাল। টানেলের শেষে কোনও আলো দেখতে পাচ্ছি না। আমি ক্লান্ত। নভেম্বর মাসে প্রথম সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলাম। তারপর কী হয়েছে? কিছুই নয়। ক্লান্ত আমি”।
বলে রাখি, রাজ্জ্যে এসএসসি দুর্নীতি থেকে শুরু করে টেট, এসএলএসটি, ভোট পরবর্তী হিংসা, কংগ্রেস কাউন্সিলর খুন সব তদন্তের নির্দেশ সিবিআইকে দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু কোনও মামলারই তেমন আশানুরূপ ফল হচ্ছে না। আর তাই জন্যই হতাশ তিনি।
এদিন স্কুল নিয়োগ সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এসেছিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শুনানি শুরুর আগে কল্যাণের সঙ্গে কথোপকথনের সময়েই বিচারপতি সিবিআই নিয়ে তাঁর হতাশার কথা বলেন। এমনকি, কল্যাণের সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়েও কথোপকথন হয় বিচারপতির।
কল্যাণ বলেন, “২০১১ সাল পর্যন্ত আমার দায়িত্ব ছিল। এখন অনেক বড় বড় আইনজীবী চলে এসেছেন। আমার ভালো লাগে না। শুধু পার্থর জন্য আছি। নইলে এতে আমি থাকতাম না”। তিনি প্রশ্ন তোলেন প্রথম প্রথম খুব কাজ দেখায় সিবিআই। কিন্তুন কটা মামলার আর নিষ্পত্তি হয়েছে?
এটা শুনে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের কাছে এটা আনন্দের নয়, বরং শিক্ষার। আমার সন্দেহ আছে সিবিআই কত কী করবে! আশা করব, রাজ্যের প্রধান তিনি কিছু করবেন। নভেম্বরের পর থেকে কিছুই করেনি সিবিআই। কাকে তদন্ত করতে বলব! এটা চলতে পারে না। ক্যামেরার সামনে সাতদিন। কিন্তু ফল কী? কর্মহীনদের কী হবে? আমার একটাই উদ্দেশ্য সঠিক ব্যক্তিরা চাকরি পাক”।