বাঙালি জাতির মা তুলে গালিগালাজ তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কবীর সুমনের! কিন্তু শাসককে খুশি করতেই কি গোটা ঘটনায় চুপ ‘বাংলার পক্ষের’ সংগঠনগুলি?

যারা নব্বইয়ের দশকে কিশোরবেলা পেরিয়েছেন তাদের কাছে আদর্শ ছিলেন বিখ্যাত গায়ক কবীর সুমন। তার এক একটা গানের লাইন বুকে এসে বিঁধত বাঙালির। কবীর সুমনের জন্য পাগল ছিল গোটা কলকাতা। কিন্তু এবার তিনি গোটা বাঙালী জাতিকে এমন ঘৃণ্য অপমান করে বসলেন যা জানতে পেরে বাঙালি হিসেবে আপনার মন ঘৃণায় ভরে ওঠা উচিত।
ঘটনাটা ঘটেছে গত পরশু। একটি বিখ্যাত টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কবীর সুমনকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রত্যাখানের বিষয়ে ফোন করেন। তিনি যখন নিজের চ্যানেলের নামটি বলেন তখনই রাগে ফেটে পড়েন কবীর সুমন। শুরু করেন অ’শ্লীল ভাষায় গা’লিগালাজ। চ্যানেলটিকে আরএসএসের ধ্বজাধারী বলেন। এত পর্যন্ত সহ্য করা যেত হয়ত কিন্তু এরপরই তিনি বলেন যে বাঙালির মাকে ** এবং সাংবাদিককে বলেন বোকা**। চলতে থাকে আরো অশ্লীল গালিগালাজ। বাধ্য হয়ে ওই সাংবাদিক ফোন রেখে দেন। এরপরে এই কল রেকর্ডিং ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বলে রাখি, কবীর সুমনের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ নতুন কিছু না। স্টেজে উঠে অ’শ্লীল অঙ্গভঙ্গি করা, মহিলাদের সঙ্গে অ’সভ্যতা করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে বহুদিনের। ২০০৬ সালে তিনি যখন তারা টিভিতে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন তখন নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুর ইস্যু নিয়ে তৎকালীন বাম সরকার কে অ’শ্লীল ভাষায় তিনি আক্রমণ করতেন যা কানে শোনার নয়। সেসময় বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়শই চলে যেতেন ‘তারা টিভি’তে শো করতে। এর আগে তিনি বাংলাদেশের ‘চ্যানেল আই’তে সাংবাদিক ছিলেন। সেখানে কাজ করার সময় একটি অনুষ্ঠানে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কুরুচিকর আক্রমণ শানান কবীর সুমন। যার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ব্যান করে দেয় এবং ‘চ্যানেল আই’ কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে হয়।
কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে গোটা ঘটনায় বাঙালির সভ্য সমাজ প্রতিবাদ করার বদলে উল্লাসে ফেটে পড়ে কবীর সুমনকে সমর্থন করছেন।এমনকি বাঙালির পক্ষের সংগঠনগুলি যারা যে কোনো বাঙালির অপমান দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিবাদ করে তারাও বাঙালি জাতির অপমান দেখে একদম চুপ। আবার নেটিজেনদের দাবি যে, এই সংগঠনগুলি শাসকদল পরিচালিত হওয়ায় শাসক দলের প্রাক্তন সাংসদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার সাহস নেই তাদের। কতিপয় বাঙালি সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন কিন্তু বাকিরা নিজেদের জাতির অপমানের পড়েও উল্লাস প্রকাশ করছেন যে কবীর সুমন যা বলেছেন ঠিক বলেছেন। তাদের দাবি, যে চ্যানেল এর পক্ষ থেকে ফোন করা হয়েছিল সেই চ্যানেলটি নাকি সারাক্ষণ বিরোধীদের জয়গান গায় তাই সেই চ্যানেলের সাংবাদিক কে মা তুলে গা’লাগালি দেওয়াই যায়। এটা এমন কিছু ব্যাপার না।
অন্যদিকে বাকি শিল্পীরাও কেউ একজনও গোটা ঘটনার প্রতিবাদ করলেন না।কেবলমাত্র শ্রীজাত ফেসবুক একটি কড়া পোস্ট দিয়ে গোটা ঘটনার এবং কবীর সুমনের তীব্র সমালোচনা করেছেন। কিন্তু নামী বাঙালি বাঁচাও সংগঠন এবং সাধারণ বাঙালি যেভাবে গোটা ঘটনায় চুপ করে রয়েছে তাতে কোথাও গিয়ে কবীর সুমনের মত মানুষকেই প্রশ্রয় দেওয়া হয়ে যায়। যা একজন সুস্থ সভ্য বাঙালি হিসেবে কোনমতেই কাম্য নয়।
কবীর সুমনের ভাইরাল অডিও ক্লিপ
এই অডিও’র সত্যতা যাচাই করেনি ‘খবর ২৪x৭’