‘টিকিট আমি নিজে দেব, কেউ এখন কিছু চাইবেন না, কাজ করুন ভালো করে’, পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিশেষ বার্তা মমতার

সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election)। এখন সেদিকেই নজর সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির। শাসক দলও প্রস্তুতিতে নেমেছে কোমর বেঁধে। গতকাল, শুক্রবার সংগঠন নিয়ে আলোচনা করতে রাজ্যের বিধায়ক, জেলা সভাপতি ও জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের নিয়ে কালীঘাটে (Kalighat) বৈঠক করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী নিয়েও বিশেষ বার্তা দেন তিনি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের এই বৈঠক যে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিন দলের সংগঠন নিয়ে নানান আলোচনা হয় এই বৈঠকে। বেশ কিছু নেতাদের দায়িত্ব বাড়ানো হয়েছে সংগঠন স্তরে। এর পাশপাশি এদিন আগামী প্রজন্মের নেতৃত্বকেও বিশেষ বার্তা দেন মমতা।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “অনেকে বলে বেড়াচ্ছেন, মমতাদি না থাকলে দল করব না। তারা কারা?’ তার পরেই তার বার্তা, ‘তা-ই যদি হবে, তা হলে এত কষ্ট করে কেন দল করে দিয়ে যাচ্ছি! ইন্দিরা গান্ধী বা রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পরে কি কংগ্রেস উঠে গিয়েছে? যারা এ কথা ভাবছেন, তারা চাইলে চলে যান”।
এদিন দলের ছাত্র-যুবদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “এখনই কেউ টিকিট চাইবেন না। আরও কাজ করুন। অভিজ্ঞতা হোক, তারপর”। এদিন তৃণমূল নেত্রী সাফ জানিয়ে দেন দেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী তিনি নিজে বাছাই করবেন। তাঁর কথায়, “জেলা সভাপতি, এমএলএ-রা কেউ কাউকে টিকিট দেবেন বলে কথা দেবেন না। সব টিকিট আমি দেব”।
সম্প্রতি সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনে হার হয়েছে তৃণমূলের, এদিনের এই বৈঠকে সেই বিষয় নিয়েও কথা বলেন মমতা। তাঁর কথায়, “নেতাদের অনেকে তো আগেই বলে দিয়েছিলেন তৃণমূল হারবে”। এরপর ইদ্রিস আলি, আখরুজ্জামানদের নাম নিয়ে মমতা বলেন, “ট্রেনের মধ্যে আলোচনায় আমাকে, অভিষেককে গাল দিচ্ছেন। ‘শিওর’ বলে দিয়েছেন, কত ভোটে দল হারবে”।
কিছুটা আক্ষেপের সুরেই দলনেত্রীকে বলতে শোনা যায়, “আমি তো সুব্রত সাহার ছেলেকেই প্রার্থী করতাম। কিন্তু শুনলাম ব্যক্তিগত স্তরে কিছু অভিযোগ আছে তার নামে। মামলাও আছে”। শুধু তাই-ই নয়, এদিনের এই বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম, উদয়ন গুহদের বেশ ধমকও দেন মমতা। কিছু কিছু নেতাকে মুখে লাগাম দেওয়ার কথা বলেন তিনি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলে যে কোনওরকম আর অশান্তি চাইছেন না মমতা, তা বেশ স্পষ্ট।