আমলা পদের অপব্যবহার করে নিজে অফিসে গেলেন মা আর ছেলে ঘুরলেন শপিং মলে! ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
নিজের পদের যথেচ্ছ অপব্যবহার করেছেন একজন আমলা সেই নিয়েই আজ ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে কর্মরতা একজন আমলার ছেলে বিদেশ থেকে ফিরেছেন ভাইরাসের জীবাণু সাথে নিয়ে। এরপর আক্রান্ত তরুণকে দু’বার হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হলেও, তিনি তা মানেননি। উল্টে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু মঙ্গলবার কলকাতায় প্রথম করোনাভাইরাসের প্রমাণ নিশ্চিত হয়েছে ওই তরুণের শরীরে।
এই নিয়ে বুধবার নবান্নে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের এক জন প্রভাবশালী বলেই বিদেশ থেকে এসেও তাঁর সন্তান পার্কে, শপিং মলে ঘুরে বেড়ালেন— এটা আমি সমর্থন করি না।’’
ওই তরুণ রবিবার লন্ডন থেকে ফিরেছিলেন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছিলেন, তার পর এম আর বাঙুর হাসপাতাল থেকেও একই কথা বলা হয়। কিন্তু তিনি তা গ্রাহ্য করেননি। উল্টে শপিং মল-সহ নানা জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। তাঁর মা নবান্নে গিয়ে কাজও করেছেন। একাধিক কর্মী-অফিসারের সংস্পর্শেও এসেছেন। এই নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘‘হঠাৎ করে বিদেশ থেকে এসে একটা শপিং মলে চলে গেলাম। সেখানে আরও পাঁচ জন আক্রান্ত হলেন। পার্কে গেলাম, সেখানে আরও কয়েক জনের সংক্রমণ হল। এটা আমি সমর্থন করি না। বার বার বলছি, নিজেরা নিজেদের মতো করে সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন। যিনি বিদেশ থেকে আসছেন, তাঁর বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন রয়েছেন। তাঁরাও সংক্রমিত হতে পারেন। অথচ কোনও ডায়াগনসিস করা হল না!’’
করোনা নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার ফাঁকে আবারও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত তথ্য তোলেন তিনি, ‘‘আমি কেন চেষ্টা করব না? আমার রোগ যাতে অন্যের শরীরে সংক্রামিত না হয়। আমি কেন নিজেকে আইসোলেশনে রাখব না বলুন তো। কালকে যে ঘটনা ঘটে গেছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে বিমানবন্দরে কি চেক হচ্ছে? তার পরেও কেউ কি করে ঘুরে বেড়িয়েছে এখানে-সেখানে।’’
এ দিনও করোনা নিয়ে সাবধানতার পরামর্শ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শুধু নিজে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা নয়, যে সদর দরজা খুলছেন, যে বাথরুমের দরজা খুলছেন, সেগুলোও নিয়মিত ব্যবধানে স্যানিটাইজিড করুন।’’ এ ছাড়া আগামিকাল বৃহস্পতিবার থেকে নবান্নে রোস্টার পদ্ধতি চালু-সহ একগুচ্ছ ব্যবস্থাপনার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
কিছু সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধেও এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এটা কলকাতার কেস নয়। ইউকে থেকে করোনা নিয়ে কলকাতায় এলেন এক জন। অথচ সংবাদ মাধ্যম নিজেদের মতো করে লিখে দিলেন এবং ভুল তথ্য প্রচার করে দিলেন! দায়িত্বজ্ঞানহীন রিপোর্টিং হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে। বিনা কারণে আতঙ্ক ছড়ালে সরকার ছেড়ে দেবে না যাঁরা করছেন, তাঁদের হাত করজোড়ে অনুরোধ, এটা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না।’’