ভয় পেয়ে নবান্ন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর, কটাক্ষ বিজেপি যুব মোর্চার কেন্দ্রীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্যের

কথা ছিল শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজেপির মিছিল এসে পৌঁছাবে নবান্নে। মোট সাতটি বিষয়সূচী নিয়ে হবে তাদের এই অভিযান। বিজেপি যুব মোর্চার কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে এটাই হতে চলেছিল তেজস্বী সূর্যের প্রথম প্রতিবাদ মিছিল। কিন্তু সব পরিকল্পনা বানচাল করে দিয়ে ৮ই অক্টোবর থেকে দু’দিন নবান্ন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। প্রচণ্ড ভয় পেয়েই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কলকাতায় পা রেখেই এমন মন্তব্য করলেন তেজস্বী সূর্য।
আজ, বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার ডাকে নবান্ন অভিযানের আগেই ঝাঁপ বন্ধ করা হল নবান্নের। অতিমারি পরিস্থিতিতে জীবাণু নাশ করার প্রক্রিয়ার জন্য আজ থেকে আগামী দু’দিন নবান্ন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমনকি, সামাজিক দূরত্ববিধি-সহ একাধিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উদ্দেশ্যে নবান্নে পৌঁছানোর বিভিন্ন পথও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
এমনকি, নবান্নের তরফ থেকে বিজেপিকে চিঠি দেওয়া হয় যাতে তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করেন। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্লেখ করে বিজেপিকে জমায়েত না করার অনুরোধও করা হয়েছে বলে জানা যায়।
কিন্তু তাতেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় বিজেপি। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তেজস্বী সূর্য বলেন যে মিছিলের অনুমতি যে পাওয়া যাবে না, তা জানাই ছিল। কিন্তু প্রশাসনের এতো চেষ্টা সত্ত্বেও তাদের অভিযান যে সফল হবে তা নিশ্চিত করেন তিনি।
গতকাল রাতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে তেজস্বী বলেন, “মমতা দিদি ভয় পেয়েছেন। শুনলাম তিনি নাকি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর বন্ধ রাখছেন। এটিই হল বাংলায় আসল পরিবর্তনের ইঙ্গিত। তার নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্যের জাতীয়তাবাদী নবীন প্রজন্ম।”
যুব মোর্চার অভিযান রুখতেই যে অতিমারির দোহাই দিয়ে নবান্ন বন্ধ রাখা হচ্ছে, একথাও স্পষ্ট ভাষায় জানান তেজস্বী। তাঁর কথায়, কয়েকদিন আগে পর্যন্তও কৃষি আইন পাশ নিয়ে শাসকদলের নেত্রী মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই সময় সামাজিক দূরত্বের কথা মনে হয়নি। তবে কি তৃণমূলের জন্য রাজ্যে আলাদা আইন রয়েছে, এমন প্রশ্নও তোলেন তেজস্বী। এমনকি, মমতা বন্দপাধ্যায়কে ফ্যাসিবাদী সরকারের জীবন্ত উদাহরণ বলেও দেগেছেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসার পরেই রাজ্য সচিবালয়ে তালা পড়েছে বলে মনে করেন যুব মোর্চার কেন্দ্রীয় সভাপতি। এদিকে কাজের দিনে নবান্ন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনাও করা হয় বিজেপির পক্ষ থেকে। তেজস্বীর কথায় মমতার সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণেই রাজ্যে বেকারত্বের হার বেড়েছে, গত দুই বছরে বিজেপি যুব মোর্চার প্রায় ২০০ জন কর্মীকে খুন করেছে তৃণমূল দুষ্কৃতীরা। সারা দেশের যুব সম্প্রদায় বাংলার নবীনদের সঙ্গে রয়েছে বলে তিনি আশ্বাস দেন। রাজ্য সরকারের এতো চেষ্টা সত্ত্বেও তাদের আজকের এই অভিযান যে সফল হবেই এ বিষয়েও নিশ্চিত করেন তেজস্বী সূর্য এবং এই অভিযানে কমপক্ষে ৫০,০০০ মানুষ অংশগ্রহণ করবেন বলেও জানান বিজেপির যুব মোর্চার কেন্দ্রীয় সভাপতি।