‘আমি দিল্লির সাংসদ-বিধায়ক, আর দিল্লি আসব না’, তবে কী সত্যিই বিজেপির প্রত্যাবর্তন ঘটছে মুকুলের? ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট অনুপমেরও
গতকাল, রাতে আচমকাই মুকুল রায়ের অন্তর্ধানের খবর মেলে। বিমানবন্দর থেকে তিনি নাকি গায়েব হয়ে যান নিজের দুই সঙ্গীকে নিয়ে। অবশেষে খবর মেলে তিনি দিল্লি গিয়েছেন। দিল্লি বিমানবন্দরে তাঁকে দেখা যায় সাদা পাজামা-পাঞ্জাবিতে।
তিনি কেন দিল্লি এসেছেন, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাহ দিল্লি আসব না! আমি তো দিল্লির সাংসদ-বিধায়ক। তাই এসেছি”। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, দিল্লিতে কি কোনও বিশেষ কাজ রয়েছে? মুকুলবাবু বলেন, হ্যাঁ দিল্লিতে তো কাজ থাকেই। তাঁকে ফের জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনি কি ডাক্তার দেখাতে এসেছেন? জবাবে মুকুলবাবু বলেন, “দিল্লি এলে একবার ডাক্তার দেখিয়ে নি”।
দিল্লি বিমানবন্দরে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে মুকুলকে বলতে শোনা যায়, “দিল্লিতে দরকার আছে, আসতে পারব না? অসুস্থতা নয়, এমনই এসেছি। আমি তো এখানের এমএলএ, এমপি, না আসার তো কোনও কারণ নেই। কোনও বিশেষ কারণে আসিনি। দিল্লিতে আসলে ডাক্তার তো দেখাতেই হয়। হঠাত করে নয়, দিল্লিতে আমি মাঝে মধ্যেই আসি। এবার আসতে একটু দেরি হল এই যা। যে ক’দিন দরকার হব সে ক’দিন থাকব”।
জানা গিয়েছে, সন্ধ্যার বিমানে ২ সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লিযাত্রা মুকুলের। গতকাল সন্ধে পৌনে ৭টা নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছন মুকুল রায়। নিরাপত্তারক্ষীদের বাইরে রেখে ২ জনকে নিয়ে ঢুকে যান ভিতরে। এর কিছুক্ষণ পর বিমানবন্দরে হাজির হন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়। বাবাকে বিমান থেকে নামিয়ে দিতে থানায় লিখিত অনুরোধ করেন শুভ্রাংশু। কিন্তু ততক্ষণে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়ে দেয় বিমান। এরপর রাত পৌনে ১০টা নাগাদ দিল্লিতে নামে বিমান। রাত ১০টা নাগাদ দিল্লি বিমানবন্দর থেকে বেরোতে দেখা যায় মুকুল রায়কে।
মুকুলের এই ঘটনার মধ্যেই আজ, মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায় বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট। পোস্টে তিনি শুধু লিখেছেন, “প্রত্যাবর্তন”। কার প্রত্যাবর্তন বা এই পোস্টের সঙ্গে মুকুল রায়ের কোনও যোগ রয়েছে কী না, তা কিছুই জানান নি তিনি।
এই বিষয়ে এক সংবাদমাধ্যমের তরফে অনুপম হাজরাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে সময় এলেই সবটা জানা যাবে। এখনই এত তাড়াহুড়ো করে লাভ নেই। অন্যদিকে, মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু দাবী করেছেন যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদনাম করতেই মুকুলকে নিয়ে এমন রাজনীতি করছে বিজেপি।
এর উত্তরে অনুপম বলেন, বিজেপিরে এখনও এতটা খারাপ অবস্থা আসেনি যে অভিষেককে বদনাম করতে এসব করার দরকার পড়বে। তাঁর কথায়, যে ছেলে বাবার সম্পর্কে কিছু জানে না, বাবা কোথায় যাচ্ছেন না যাচ্ছেন, খবর রাখে না, তাঁর মুখে এসব কথা মানায় না।
শুভ্রাংশু এও অভিযোগ তোলেন যে কোনও এজেন্সি একটি ছেলের মাধ্যমে মুকুলের হাতে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে। শুভ্রাংশুর কথায়, তাঁর বাবার যা শারীরিক ও আর্থিক অবস্থা, তাতে দুই সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লি যেতে পারবেন না তিনি। তাঁর এই অভিযোগ প্রসঙ্গে অনুপমের দাবী, “উনি কোন ভিত্তিতে একথা বলছেন, আমার জানা নেই। তবে সময় এলে পুরোটাই পরিষ্কার হয়ে যাবে। মুকুল রায় কতটা অসুস্থ কতটা নয় তাও জানা যাবে”।