‘সরকার সম্পর্কে ভালো খবর করলে তবেই মিলবে বিজ্ঞাপন’, মমতার মন্তব্যকে মমতাকে তীব্র ধিক্কার মুম্বই প্রেস ক্লাবের, ভয়ে চুপ কলকাতা প্রেস ক্লাব?
কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক প্রশাসনিক বৈঠকে রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরেই বলেছিলেন যে সরকারের সম্পর্কে যদি ভালো খবর, পজিটিভ খবর করা হয়, তবেই নানান সংবাদমাধ্যম বিজ্ঞাপন পাবে। মমতার এমন মন্তব্যের এবার তীব্র ধিক্কার জানাল মুম্বই প্রেস ক্লাব।
মুম্বই প্রেস ক্লাবের তরফে একটি টুইট করে বলা হয়েছে যে সরকারি বিজ্ঞাপনের জন্য মিডিয়াকে ব্যবহার করার রীতি নতুন কিছু নয়, সব সরকারই করে থাকে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার সমস্ত সীমানা পেরিয়ে গেলেন।
এরপর আরও একটি টুইট করে মুম্বই প্রেস ক্লাবের তরফে বলা হয় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন মন্তব্যের অর্থ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে খর্ব করা। এর জন্য মুম্বই প্রেস ক্লাবের তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রবল ধিক্কার জানানো হচ্ছে বলেও লেখা হয়। শুধু তাই-ই নয়, মুম্বই প্রেস ক্লাবের তরফে তাঁর এমন মন্তব্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবী জানানো হয়েছে এবং সংবাদমাধ্যমকে প্রকৃত সম্মান দেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
This is a threat to the freedom of the press, and the Mumbai Press Club deplores this crass public offer made by Mamata Banerjee. We demand she withdraw her statement immediately and respect freedom of the press.@MamataOfficial @IndEditorsGuild #freedomofpress
বিজ্ঞাপন— Mumbai Press Club (@mumbaipressclub) December 7, 2021
বিজ্ঞাপনঘটনাটি ঠিক কী?
গত মাসের এক প্রশাসনিক বৈঠকে এক গ্রামীণ পত্রিকার কর্ণধার মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, “দিদি, আমরা গ্রামীণ পত্রিকায় কাজ করি। আমার কাগজ গত ১১ বছর ধরে চলছে। কিন্তু আমরা যারা তথাকথিত ছোট পত্রিকায় কাজ করি তাদের আর্থিক অবস্থা খুব সঙ্গীন। কারণ আমরা বিজ্ঞাপন পাই না। এ ব্যাপারে যদি একটু নজর দেন তবে ভাল হয়”।
এর উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে গ্রামীণ পত্রিকাগুলো সরকারের ডেভলপমেন্ট কাজ পজিটিভলি, পজিটিভ ভাবে করবেন, আমি ডিএমকে বলব, তাদের যেন আমরা বিজ্ঞাপনটা দিই”।
তিনি আরও বলেন, “সরকার সবসময় তার মেশিনারি দিয়ে পাবলিসিটি করে না। আজ এতগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন হল, বড় বড় টিভিরা একবার দেখাবে, ছেড়ে দেবে। কিন্তু, গ্রামীণ এই পত্রিকাগুলো লিখে কিন্তু গ্রামে গ্রামে এটা পৌঁছয়। সুতরাং লোকাল যারা রয়েছে তাদের কিন্তু আমাদের দেখে নিয়ে, যারা পজিটিভ এই কাজ টা করে…কেউ একটা থাকবে…ডিআইসিও, ডিএমের সঙ্গে কথা বলে দেখে নেবেন। আর তাঁরা যে কাজটা করছেন, প্রতিদিন একটা করে কপি ডিএম অফিসে পাঠাবেন। ডিআইসিওকে পাঠাবেন। পুলিশের এসপি এবং পুলিশ কমিশনারেটকে পাঠাবেন”।
কিন্তু এদিনের এই ঘটনার পর কলকাতা প্রেস ক্লাবের তরফে কিন্তু কোনও মন্তব্য করতে শোনা যায়। এই নিয়েও উঠছে বিস্তর প্রশ্ন। ভন রাজ্যের প্রেস ক্লাব যদি মমতার এমন মন্তব্যের কারণে ধিক্কার জানাতে পারে, তাহলে খোদ কলকাতার প্রেস ক্লাব কেন এই ঘটনার পর কোনও মন্তব্য, কোনও বিরোধিতা করল না? তাহলে কী বলা যেতে পারে যে কলকাতার প্রেস ক্লাব ভয় পেয়েছে? কিন্তু ভয়টা কীসের? সরকারের? তাহলে কী কলকাতা প্রেস ক্লাবের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আর এই কারণেই সংবাদমাধ্যমকে এমন অপমান করার পরও তারা নীরব? এমন নানান প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নানান সংবাদমাধ্যম মহলে।
বিজ্ঞাপন