সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি! কালী মন্দিরে প্রতিমার গয়না চুরির চেষ্টা, রুখে দাঁড়ালেন এক মুসলিম

বাড়ির উল্টোদিকেই কালী মন্দির। সেই মন্দিরেই চুরির উদ্দেশ্যে হানা দেয় চোরের দল। তা দেখতে পেয়ে এক মুসলিম ব্যক্তি যা করলেন, তা নজিরবিহীন। তাঁর জন্যেই ধরা পড়ল এক চোর। এই ঘটনা সাড়া ফেলে গিয়েছে গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে প্রতিষ্ঠা করল বলেই মনে করছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার দেগঙ্গা ব্লকের বেড়াচাঁপা-২ পঞ্চায়েত গিলেবেড়িয়া প্রাচীন কালী মন্দিরে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে অন্ধকার থাকতেই কালী মন্দিরে হানা দেয় তিন দুষ্কৃতী। মন্দিরের প্রতিমার গায়ের লক্ষাধিক টাকার গয়না চুরিই ছিল তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। চুরির জন্য মন্দিরের তালা কাটতে শুরু করে তারা।
এই মন্দিরের উল্টোদিকেই থাকেন আবদুল লতিব মণ্ডল। ভোরবেলা নমাজ আদায়ের জন্য বেরোচ্ছিলেন তিনি। এইসময়ই চোরদের দেখেন আবদুল। তালা কাটতে দেখেই বুঝতে পারেন যে চুরির উদ্দেশ্যেই এসেছে এই তিনজন। এরপর বাড়ি থেকে নিজের ছেলে রবিউলকে ডেকে আনেন আবদুল। এরপর চোরদের কীর্তি মোবাইলে ভিডিও রেকর্ড করেন তিনি।
এর সঙ্গে প্রতিবেশীদেরও খবর দেন আবদুল। অবস্থা বেগতিক দেখে পালানোর চেষ্টা করে ওই তিন দুষ্কৃতী। দু’জন পালিয়ে গেলেও তৃতীয় জনকে ধরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার নাম জয় বোদে, বয়স ১৯। ধৃতকে বেঁধে মারধরও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর তাঁকে দেগঙ্গা থানার পুলিশ এসে গ্রেফতার করে।
মন্দিরের চুরি ও চোরকে ধরার জন্য আবদুল ও তাঁর ছেলেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মন্দির কমিটির সদস্যরা। এই বিষয়ে আবদুলের বক্তব্য, “আমি যেমন নিজের ধর্মকে ভালোবাসি, তেমন অন্যের ধর্মকেও সম্মান করি। তাদের ধর্মের উপর আঘাত মেনে নিতে পারিনি তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চুরি আটকানোর চেষ্টা করেছি”।