West Bengal

চাই বংশধর! মৃত ছেলের বীর্য নিয়ে আইনি লড়াই শ্বশুর-বৌমার! কি রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট? দেখে নিন 

বিজ্ঞাপন

মৃত ছেলের বীর্য নিয়ে টানাটানি শশুর বৌমার! মামলা গড়ালো কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। জিতলেন বৌমা।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু ঘটনা কি?

বিজ্ঞাপন

একমাত্র ছেলে মারা গেছে। কিন্তু বংশধরের আশা ছেড়ে বেরোতে পারেননি বৃদ্ধ। আর সেই কাজে বাদ সেধেছে পুত্রবধূ।এই নিয়ে ছেলের শুক্রাণুর অধিকার চেয়ে মামলা করেছিলেন বাবা। কিন্তু, কলকাতা হাইকোর্ট নিজেদের রায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তির বীর্যের উপর অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র তাঁর বিধবা স্ত্রীর, তাঁর বাবাকে কোনও অধিকার নেই।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চে কলকাতা হাইকোর্টে মৃত ওই ব্যক্তির বাবা নিজের আবেদনে জানিয়েছিলেন, দিল্লির এক হাসপাতালের স্পার্ম ব্যাঙ্কের সঙ্গে তাঁদের যে চুক্তি রয়েছে, সেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে তাঁর মৃত পুত্রের শুক্রাণু নষ্ট করে ফেলা হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে তাঁর নিজের বংশ আর এগোবে না। তাই সেই শুক্রাণু বা বীর্যের অধিকার পাওয়ার জন্য তিনি তাঁর পুত্রবধূর কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, পুত্রবধূ তাদের সেই আবেদনটি স্বীকারই করেননি। তাই আদালতের কাছে সেই অধিকার চেয়ে মামলা করেছিলেন মৃত পুত্রের বাবা।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, মৃত ব্যক্তি আদতে কলকাতার বাসিন্দা হলেও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পড়াশোনা করেছিলেন। সেইসঙ্গে দিল্লির এক হাসপাতালে তাঁর থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসাও চলছিল। সেইসময়ই তাঁর বাবা-মা স্পার্ম ব্যাঙ্কে তাঁর শুক্রাণু সংরক্ষণ করেছিলেন।

নিজে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকদের সম্মতি নিয়ে ২০১৫ সালের অক্টোবরে দিল্লির এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। কয়েকমাস পর, পশ্চিম মেদিনীপুরের এক কলেজে অধ্যাপকের চাকরি পান, তারপর সস্ত্রীক সখানেই চলে এসেছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। ২০১৮ সালে ওই ব্যক্তির অকস্মাৎ মৃত্যু হয়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে দিল্লির স্পার্ম ব্যাঙ্কের সঙ্গে দু’বছরের চুক্তি ছিল তাঁদের। পুত্রের মৃত্যুর পরই , বাবা-মা সেখানে যোগাযোগ করে অনুরোধ করেছিলেন, মেয়াদ উদ্দীর্ণ হলেও, তাঁদের সম্মতি ছাড়া যেন‌ও ছেলের শুক্রাণু নষ্ট না করা হয়। কিন্তু, ২০১৯-এ হাসপাতাল থেকে মৃত ব্যক্তির বাবা-মাকে জানানো হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দাতার স্ত্রীর ওই শুক্রাণু ব্যবহার করে নিজে গর্ভবতী হবেন, না অন্য কাউকে দান করবেন, না কি ষ্ট করে ফেলবেন – সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রোগীর স্ত্রীর। তিনি অনুমতি দিলে তবেই বাবা-মা সেই শুক্রাণুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এরপরই পুত্রবধূর কাছে ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট চেয়েছিলেন পুত্র হারা বাবা। সেখান থেকেই মামলা গড়িয়েছিল আদালতে।

আর এই বিষয়েই চলতি বছরের ১৯শে জানুয়ারি তিন পৃষ্ঠার রায় দেন কলকাতা হাইকর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। তিনি জানান, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে শুধুমমাত্র পিতা-পুত্রের সম্পর্ক আছে বলেই আবেদনকারী তাঁর মৃত ছেলের শুক্রাণুর অধিকার পাবেন না। মৃত ব্যক্তি বিবাহিত ছিলেন বলে শুক্রাণু পাওয়ার মৌলিক অধিকার একমাত্র তাঁর স্ত্রীরই রয়েছে। উচ্চ আদালত আরও বলেছে, আবেদনকারী মৃত ব্যক্তির বাবা বলে, পুত্রের বংশধরদের উপর তাঁর অধিকার নেই। সেই হিসাবে, আবেদনটিকে ‘অলীক ও অবাস্তব’ বলা হয়েছে।

 

বিজ্ঞাপন
Back to top button

Discover more from Khabor24x7

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading