মুখ্যমন্ত্রীর পর প্রধানমন্ত্রী! স্ট্র্যান্ড রোড অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের পরিবারপিছু দু’লাখ আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা মোদীর
গতকাল ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ স্ট্র্যান্ড রোডের পূর্ব রেলের অফিসের ১৩ তলায় আগুন লাগে। আগুনের সামনে কার্যত আত্মসমর্পণ করে ঝলসে এবং দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ন’জনের। দুটি লিফট থেকে ন’জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার রাত একটা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে দেহগুলি নিয়ে যাওয়া হয়। দেহগুলি ঝলসে এতটাই বিকৃত হয়ে গেছে যে এখনও সবাইকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে মৃতদের মধ্যে আছেন পূর্ব রেলের ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার পার্থসারথি মণ্ডল, দমকলের চার কর্মী, হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই, আরপিএফের এক কনস্টেবল। বাকি দু’জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আগুনে ঝলসে যাওয়ায় দেহগুলি শনাক্ত করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দু’তিনজনের দেহ চিহ্নিত করেছেন সহকর্মীরা। ময়নাতদন্ত রাতেই করা হয়। যা বাধ্যতামূলক। কিন্তু শনাক্তকরণ ছাড়া কি আমরা পরিবারের হাতে দেহ তুলে দিতে পারি?’
রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে সুজিত বসুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের তরফে শোক প্রকাশ করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়। এরপরই স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে শোকপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারপিছু দু’লাখ আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের ৫০,০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হবে।
আজ সকালে টুইটারে মোদী বলেন, ‘কলকাতায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় শোকাহত। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারপিছু দু’লাখ আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন মোদী। গুরুতর আহতদের ৫০,০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতকাল যখন পূর্ব রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের ১৩ তলায় আগুন লাগে সেই সময় অফিসে প্রায় ৫০০ জন ছিলেন। আগুনের লেলিহান শিখা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে ১২ তলায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সবমিলিয়ে মোট ২৫ টি ইঞ্জিন। জায়গা ছোট হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় দমকলকে। ঘণ্টা চারেকের চেষ্টায় প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। কিন্তু রাতের দিকে ফের কয়েক দফায় নতুন করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শেষপর্যন্ত ভোর ৪ টে ১০ মিনিট নাগাদ আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আপাতত কুলিং অফ করার প্রক্রিয়া চলছে। অর্থাৎ অগ্নিদগ্ধ ভবনকে ঠান্ডা করার প্রক্রিয়াা চলছে।
কয়েক জায়গা থেকে ধোঁয়াও দেখা গিয়েছে। তা থেকেই দমকলের অনুমান, এখনও কয়েকটি জায়গায় ‘পকেট ফায়ার’ রয়ে গিয়েছে। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসবে ফরেন্সিক দল। কী কারণে আগুন লেগেছে, সেই কারণ খতিয়ে দেখা হবে।