কেউ চালাচ্ছে দোকান তো কেউ আবার মোটরবাইকের মেকানিক, গরমের ছুটিতে নানাভাবে রোজগারের পথ খুঁজছে গরীব পড়ুয়ারা
সরকার আরও বাড়িয়েছে গরমের ছুটি। প্রায় গোটা জুন মাসই বন্ধ স্কুল। কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকলেও, সংগসারের অভাব তো কমছে না। তাই ঘরে বসে না থেকে গরমের ছুটিতে নানান কাজে লেগে পড়েছে গরীব পড়ুয়ারা। সংসারে সাহায্য করার জন্য দিনমজুরের কাজ করছে অনেকেই।
পুরুলিয়ার পাঞ্জনবেরা গ্রামের হারাধন সহিস আদাবনা নগেন্দ্রনাথ হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা ছৌ নাচ করেন। কিন্তু সেই ছৌ নাচে তো উপার্জন তেমন হয় না। আর রোজ তো ছৌ নাচও হয় না। সেই কারণে সংসারের হাঁড়ি ঠেলতে হারাধন এখন মোটরবাইকের মেকানিক। হারাধন বলে, “স্কুল বন্ধ থাকায় কিছু টাকা পয়সা উপার্জন হচ্ছে। আবার কাজও শিখেছি কিছুটা”।
ওই দোকানেই আবার কাজ করে মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র প্রেম সহিস আর ভেলাইডি গ্রামের দয়াল কর্মকারও। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে দয়াল। তার বাবা বিভূতি কর্মকার ডেকরেটর্সের দোকানে কাজ করেন। আর মা বাড়িতেই থাকেন।
সরকার গরমের ছুটি বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে তারা কাজে লেগেছে এমনই জানায় দয়াল। তার কথায়, “স্কুল তো এখন ছুটি। বাড়িতে শুধু বসে বসে কী আর করব! তাই একটা কাজ খুঁজে নিলাম। ঘরে কিছু টাকাও আসবে। তবে স্কুল খুলে গেলেই আমরা আবার যাব স্কুলে”।
অন্যদিকে আবার বাবাকে সাহায্য করতে মনোহারি দোকান চালাচ্ছে সিন্দরি হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র সৌরভ মাহাতো। তার বাবার চায়ের দোকান। মনোহারি দোকান থেকে ১০০ টাকা রোজগার হয় বলে জানায় সৌরভ। তা দিয়েই সংসারে সাহায্য করে সে।
সৌরভ বলে, “স্কুল তো বন্ধ। সময় নষ্ট করে লাভ নেই! তাই ভাবলাম বাবাকে একটু সাহায্য করি। উপার্জন খুব একটা বেশি হয় না। দিনে মাত্র ১০০ টাকা। তবে আমাদের সংসারে ওটাই অনেক”।
প্রথমে ৪৫ দিন ছুটি দিলেও, ফের আবার ১১ দিন গরমের ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ স্কুল। এদিকে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করছে। তাই ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এমন পরিস্থিতিতে গরমের ছুটি বাড়ানোর কোনও প্রয়োজন ছিল না।