রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত, জড়িত থাকতে পারে সন্ত্রাসবাদীরাও, রিপোর্ট জমা NIA-এর
একুশের নির্বাচনের ফলাফলের পরই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা। গোটা রাজ্যের চারিদিকে একাধিক মানুষের উপর অত্যাচার চালানো হয়, হামলা করা হয়। শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ঘরছাড়া হন।
এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিকে। তদন্তের সুপারিশ করে এনআইএ। এই ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পড়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে।
এই রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলায় হওয়া ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা কোনও বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই এসমস্ত হামলা চালানো হয়েছে। রিপোর্টের দাবী, সংগঠিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই হামলাগুলি চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- ফের তুঙ্গে নবান্ন-রাজভবন সংঘাত! বিধানসভা অধিবেশনে ভাষণের খসড়াতে আপত্তি রাজ্যপালের, তলব মুখ্যমন্ত্রীর
সেই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন সিকিম হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি প্রমোদ কোহলি। এছাড়াও, এই কমিটিতে আরও রয়েছেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন ডিজিপি নির্মল কউর, কেরলের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আনন্দ বসু, আইসিএসআই-এর প্রাক্তন সভাপতি নিসার আহমেদ এবং কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যসচিব এম মদন গোপাল। এই প্রাক্তন আধিকারিকরা পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডির কাছে তাঁদের রিপোর্ট জমা দেন।
এই রিপোর্টে রয়েছে এএনআই-এর তদন্তের সুপারিশ। তাতে লেখা রয়েছে, “পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত ভাগ করে। এথানে তাই অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা ঝুঁকির মুখে। দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতাও ঝুঁকির মুখে। সীমান্ত পার সন্ত্রাসবাদ এবং কট্টরপন্থীদের এই হিংসায় কতটা হাত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা উচিত”।
এছাড়াও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে “এই ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার জেরে জনজাতি ভিত্ত্বিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া গত কয়েক দশকে সীমান্তের কাছের এলাকাগুলিতে জনজাতি ভিত্ত্বিক বদল ঘটেছে ব্যাপক হারে। এর জেরে এলাকায় হিংসা এবং বেআইনি কার্যকলাপ বেড়েছে”।
আরও পড়ুন- জগদ্দলে অর্জুন সিংয়ের বাড়ির সামনেই বিজেপি কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি, কাঠগড়ায় তৃণমূল
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে নির্যাতিতারা খুবই ভীত ছিলেন। তবে এদের মধ্যেও যারা সাহস করে পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন, তাদেরকেও ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এই কারণে অনেকেই বাধ্য হয়ে নিজের ঘরবাড়ি, গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। রাজ্যের বাইরে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করেছেন তারা।