মর্মান্তিক! অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে একাধিকবার ধ’র্ষ’ণ, সন্তান জন্মের পর কেড়ে নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ, বালি থেকে গ্রেফতার ৭

গৃহবধূ তরুণীকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় একাধিকবার ধ’র্ষ’ণ ও সন্তান জন্মের পর শিশুকে জোর করে কেড়ে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়া অভিযোগ উঠল। ওই তরুণী স্বেচ্ছায় নিজের সন্তানকে বিক্রি করছেন, সেই মর্মে স্ট্যাম্প পেপারে জোর করে সই করিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বালি থানা এলাকায়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিক্রি করা শিশুটিকেও উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বালির বাসিন্দা বছর ২১ এক গৃহবধূ অভিযুক্ত গিরিরাজের বাড়িতে সেলাইয়ের কাজ করতেন। বস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত গিরিরাজ। ওই গৃহবধূর স্বামী বর্তমানে তাঁর সঙ্গে থাকেন না। ফলে কাজ করতে হচ্ছিল গৃহবধূকে। অভিযোগ, গিরিরাজ মাঝেমধ্যেই ধ’র্ষ’ণ করত তরুণীকে। গিরিরাজের কাছে মাঝে মাঝে শঙ্কর নামে এক ব্যক্তি আসত। তিনি পেশায় প্রাক্তন রেলকর্মী। শঙ্কর ওই তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করত বলে অভিযোগ। শঙ্কর ও গিরিরাজ দু’জনেই তরুণীকে ধ’র্ষ’ণ করে বলে অভিযোগ।
গত এপ্রিল মাসে প্রসবের সময় হয় ওই তরুণীর। সেই সময় গিরিরাজ ও শঙ্কর তরুণীকে সালকিয়ার এক নার্সিং হোমে ভর্তি করায়। সন্তান জন্মের গিরিরাজ আর শঙ্কর মিলে তরুণীকে তাঁর সন্তান বিক্রি করার জন্য চাপ দিতে থাকে বলে জানা গিয়েছে। তাদের পরিচিত বিষ্ণু শর্মা ও স্বাতী শর্মার কাছে সন্তানকে বিক্রি করার কথা বলা হয় তরুণীকে। কিন্তু তরুণী রাজি না হওয়ায় তাঁর থেকে তাঁর সন্তানকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে গিরিরাজ ও শঙ্কর।
গিরিরাজদের হাত থেকে শিশুকে রক্ষা করতে কলকাতায় মাসির কাছে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তরুণী। কিন্তু শিশুসন্তানকে রক্ষা করতে পারেন নি তিনি। অভিযোগ, তিনি যখন গত ৯ই মে তরুণী তাঁর শিশুকে নিয়ে কলকাতায় চলে যাচ্ছিলেন, সেই সময় গিরিরাজ, শঙ্কর, বিষ্ণু ও স্বাতী তাঁর পথ আটকায়। তরুণীকে তার শিশুটিকে দিয়ে দিতে বলে তারা।
কিন্তু তরুণী শিশুকে না দিলে তারা শিশুটিকে তাঁর থেকে কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, শিশুটিকে সালকিয়ার বাসিন্দা রাজেশ গুপ্ত ও শতাব্দী গুপ্তের কাছে বিক্রি করে দেয় গিরিরাজরা। সেই থেকে এতদিন চুপ ছিলেন তরুণী। অবশেষে ২৩ তারিখ বালি থানায় গিয়ে সব জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তরুণী।
তদন্তে নেমে গিরিরাজ, শঙ্কর, স্বাতী, বিষ্ণুকে গ্রেফতার করে বালি থানার পুলিশ। রাজেশ গুপ্ত ও শতাব্দী গুপ্তের বাড়ি থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এখন শিশুটির বয়স দেড় মাস। পুলিশকে তরুণী জানায় যে সন্তানকে ফেরত চাইলে শঙ্কর তাকে জানায় যে তিনি স্ট্যাম্প পেপারে সই করে সন্তানকে বিক্রি করেছেন। তাই বেশি কিছু বললে বা পুলিশের কাছে গেলে তিনি নিজেই ফেঁসে যাবেন।
সেই ভয়ে এতদিন পর্যন্ত চুপ ছিলেন ওই তরুণী, এমনটাই জানান তিনি। তবে শেষমেশ অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। পুলিশের এক কর্তার কথায়, স্বাতী ও বিষ্ণু এর আগেও এমন শিশু বেচাকেনা করেছে কী না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাছাড়া, ওই তরুণীও নিজের ইচ্ছাতেই নিজের সন্তানকে বিক্রি করেছিলেন কী না, তাও খতিয়ে দেওয়া হচ্ছে।