পরীক্ষা শুরুর আগেই ফাঁস হয়ে গেল ডিএলএড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, ‘এটা বিশ্বাসঘাতকতা’, আক্ষেপ করে বললেন পর্ষদ সভাপতি
আজ, সোমবার ছিল ডিএলএড-এর পরীক্ষা। এই পরীক্ষা নিয়ে পর্ষদের তরফে একাধিক নিরাপত্তা অবলম্বন করা হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা আর হল না। পরীক্ষা শুরুর আগেই ফাঁস হয়ে গেল প্রশ্নপত্র। আর সে কথা স্বীকার করে নিয়ে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, “এটাকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া বলে না, এটাকে বিশ্বাসঘাতকতা বলব”।
এদিন সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক প্রশ্নপত্রের ছবি ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। প্রশ্নপত্রের উপরে লেখা ছিল ডিএলএড পার্ট টু এক্সামিনেশন। প্রথমে অনেকেই সন্দেহ করেন এই প্রশ্নপত্র আদতে ডিএলএড পরীক্ষারই প্রশ্নপত্র কী না। তবে পরীক্ষার পর একাধিক পরীক্ষার্থী জানান যে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে প্রশ্নপত্র ঘুরছিল, তার সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হুবহু মিলে গিয়েছে। এরপরই পরীক্ষা শেষ হতেই সাংবাদিক বৈঠক করেন গৌতম পাল।
একদিকে যখন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তথা গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, সেই সময় এমন ঘটনায় যে পর্ষদের অস্বস্তি বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য। তবে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের দাবী, কেউ বা কারা পর্ষদ তথা রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই এমনটা করেছেন। তাঁর কথায়, “পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা যদি এমন কোনও বিশ্বাসঘাতকতার কাজ করেন, তাহলে তাতে পর্ষদের কিছু করার নেই”।
গৌতম পালের কথায়, পরীক্ষার্থীরা যদি অভিযোগ জানান, তাহলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। পরীক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে। তারা দেখবেন ব্যাপারটা। এর পাশাপাশি আক্ষেপ করে তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। যারা প্রশ্ন তৈরি করছে গোপনীয়তা তাদেরও দায়িত্ব। এটা প্রশ্নপত্র ফাঁস নয়ক, পর্ষদের-সরকারের সম্মানহানির চেষ্টা”।
তিনি এও জানান, “অতীতে যেহেতু ডিএলএড নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠেছে, পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তাই এবার নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখা হয়নি। হোম সেন্টারে না নিয়ে রাজ্য সরকারি স্কুল ও কলেজগুলিতে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্ষদ যত স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টা করছে, ততই পর্ষদকে পিছনের টানার চেষ্টা করছেন কেউ বা কারা”।
বলা রাখি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ডিএলএড কলেজগুলি থেকে নিয়মিত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ডিএলএড কলেজে বেনিয়মের হদিশ পান তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। এবার সেই ডিএলএড পরীক্ষাতেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠল।