কোন পথে বাংলার রাজনীতি? আসন্ন পরীক্ষার আগে দাদা, দিদি’তে ভাগ পূর্ব মেদিনীপুর!
শুভেন্দু অধিকারী যে কি করবেন তা ঠাওর করে উঠতে পারছেন না তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অনুগামীরাও। শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে ক্রমে দূরত্ব বাড়ছে রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী তথা দুঁদে রাজনীতিক শুভেন্দু অধিকারীর (suvendu Adhikari)। তার একের পর এক বক্তব্যে সিঁদুরে মেঘ দেখছে শাসকদল। দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব দেখেছেন প্রায় সকলেই। তৃণমূলের সমস্ত কর্মসূচি ও সরকারি অনুষ্ঠান এড়িয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এই নিজের গড় নন্দীগ্রামে গিয়ে তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য ঘাসফুল শিবিরে ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
বলা বাহুল্য, যে নন্দীগ্রামকে (Nandigram) হাতিয়ার করে বাংলার গদিতে বসে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay) তাঁর পিছনে সবথেকে বড় হাত ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। কিন্তু কোনদিনই নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী পদ পাননি তিনি। সেই অর্থে পাননি গুরুত্বও। আর এবার তাই আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে শুভেন্দুর এহেন পরিবর্তন চিন্তায় রাখছে তৃণমূলকে। শাসক দলের পক্ষ থেকে যতই শুভেন্দুকে ‘সম্পদ'(asset) বলা হোক না কেনও সম্পর্কের শিথিলতা কিন্তু কাটেনি।
শনিবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দু তৃণমূলের নামোচ্চারণ পর্যন্ত করেননি। উল্টে বলেছেন, ‘প্যারাশুটেও নামিনি, লিফটেও উঠিনি। সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি।’ এই মন্তব্য যে সরাসরি তৃণমূলেরই (TMC) একাংশকে উদ্ধৃত করে বলতে চেয়েছেন শুভেন্দু তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আর এই সংকটের পরিস্থিতিতেই তৃণমূলে ফাটলের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামের ওই বিজয়া সম্মিলনীতে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পাল, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আবু তাহের ও প্রাক্তন সভাপতি বনশ্রী খাঁড়া–সহ শুভেন্দু অনুগামী নেতা–নেত্রীরা উপস্থিত থাকবেন বলে খবর। আর জেলায় শুভেন্দুর বিরোধী শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচিত জেলা পরিষদের সহ–সভাপতি শেখ সুফিয়ান, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ স্বদেশ দাস থাকছেন না।
তৃণমূল নেতা সুফিয়ান বলেন, ‘অরাজনৈতিকভাবে আয়োজন করা বিজয়া সম্মিলনীতে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাই শুভেন্দুবাবুর অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।আমরা তৃণমূল কংগ্রেস করি। আমরা দিদির অনুগামী। কেউ কেউ ‘দাদার অনুগামী’ নামে কর্মসূচি করছেন।’
তৃণমূলের জেলা কো–অর্ডিনেটর অখিল গিরির কথায়, ‘রাজ্য সরকার ও দলের পদে থেকে উনি সরকারের সমালোচনা করছেন। কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলছেন না। যা বলছেন তাতে দলের নেতা–কর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। উনি দল ভাঙার চেষ্টা করছেন। ক্ষমতা থাকে তো দলের ও সরকারের পদ ছেড়ে কথা বলুন।’