এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। সম্প্রতি মমতা বাঁকুড়া সফরে গিয়ে দুয়ারে দুয়ারে সরকার নামে একটি নতুন প্রকল্প শুরু করেছেন। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্য সরকার এলাকাবাসীর সমস্ত সমস্যা তৎক্ষণাৎ সমাধান করবে। আর এই প্রকল্পকে নিয়েই কটাক্ষ করেছেন সায়ন্তন।
তিনি বলেন, “ভালো বলেছে। মরণকালে হরিনাম। এত দিন সরকার কি ছিলো আকাশে? আকাশ থেকে নেমে দুয়ারে যেতে যেতে নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাবে। আমরা বলছি, দুয়ারে দুয়ারে গেলে, কাটমানির হিসাব চাইবেন। শিল্পের কী হল? আইনশৃঙ্খলার এই হাল কেন?”
স্বাভাবিকভাবেই তার এই মন্তব্যের জেরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতি। মমতা সম্প্রতি বাঁকুড়ার খাতড়ায় প্রশাসনিক জনসভা থেকে এই প্রকল্পের সূচনা করেছেন। আগামী ১লা ডিসেম্বর থেকে এই প্রকল্প শুরু হচ্ছে যা চলবে ৩১ শে জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রাজ্যের প্রতিটি ব্লক প্রশাসনের তরফে ক্যাম্প করা হবে যেখানে সাধারণ মানুষের নিজেদের অভিযোগ এবং অভাবের কথা জানাবেন সরকারকে। সঙ্গে সঙ্গে সেই সমস্যার সমাধান করবে প্রশাসন। আর তৎক্ষণাৎ সেই সমস্যা গুলোর সমাধান করতে না পারলে তার তালিকা তৈরি করে নিয়ে খুব জলদি সেই সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে সরকারের তরফ থেকে। এরকমটাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা, নির্বাচনের আগে সরকারের এটা একটি গিমিক মাত্র। এতদিন পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কোনো টনক নড়েনি। এখন হঠাৎ করেই নির্বাচনের আগে মানুষের সমস্ত সমস্যার চটজলদি সমাধানের যে মরিয়া তৎপরতা দেখাচ্ছে তৃণমূল সরকার তাতে তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
Related Posts
এছাড়াও খাতড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে বেকারত্ব নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে মমতা তোপ দাগেন। কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে যুবক-যুবতীদের নিয়োগ করছে। তারপর যেই সেই প্রকল্প শেষ হয়ে যাচ্ছে, তখন ছেলেমেয়েরা কাজ হারাচ্ছে।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের স্কিমে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদের কারও চাকরি নষ্ট হয়নি বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও রাজ্য সরকার চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে। জেনারেল প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৪০ বছর, ওবিসি ৪৩ বছর, তফশিলি জাতি-উপজাতির ক্ষেত্রে ৪৫ বছর করা হয়েছে। বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমিয়েছে তৃণমূল সরকার। এরকমই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। সায়ন্তন বসু মমতার এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেন যে, “চাকরি নিয়ে যা বলেছেন, ঘোড়ায় হাসবে।”
আপাতত এই নিয়েই চলছে তরজা। সামনের বছর রাজ্যে কী হবে সেটাই এখন দেখার।