‘কালসাপ দেখলে বিষদাঁত ভেঙে দেব’, দলের ‘গদ্দার’দের কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি শানালেন সায়ন্তিকা
দলের ‘গদ্দার’দের বেশ কড়া ভাষাতেই আক্রমণ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তিকান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘দুষ্টু গোরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো’। এরই সঙ্গে একুশের নির্বাচনে যে ভুল হয়েছে, তা যাতে পুরভোটে না হয় ও পুরভোটে জয় ছিনিয়ে আনার বার্তাও দেন তৃণমূল নেত্রী।
গতকাল, রবিবার বিষ্ণুপুরের যদুভট্ট মঞ্চে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী ছিল। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন যে দলের ভিতরে থেকে কেউ যদি গদ্দারি করে, তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিন সায়ন্তিকা বলেন, “দুষ্টু গোরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। অন্য দলে থাকো আর হারো এবং ফুটে যাও। ওটাই তোমাদের ভবিষ্যৎ”। এর পাশাপাশি পুরসভা ভোটের আগে দলের গদ্দারদের হটিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন সায়ন্তিকা। এই বিষয়ে বাঁকুড়ার তারকা-নেত্রী বলেন, “কালসাপ দেখব, সাপুড়ে ডাকব আর বিষ দাঁত ভাঙব”। এরপরই তাদের দল থেকে ‘হটিয়ে দেওয়া’র হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “নিজেদের ভুল সংশোধন করে পুরভোটে ‘ম্যাক্সিমাম টু ম্যাক্সিমাম’ জায়গায় জয় ছিনিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য। জয়ের লক্ষ্যে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনার সঙ্গে এক হয়ে সকলকে কাজ করতে হবে”।
এদিনের এই বিজয়া সম্মিলনীতে সায়ন্তিকা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখার্জী, বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ সহ অন্যান্য বিধায়ক, রানিগঞ্জের বিধায়ক তথা খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি,বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রশাসক অর্চিতা বিদ, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল সহ তৃণমূলের নানান স্তরের নেতারা।
বলে রাখি, একুশের নির্বাচনে বাঁকুড়ার ১২টি আসনের মধ্যে মাত্র চারটি আসন পায় তৃণমূল। বাকি আসনে জিত হয় বিজেপির। এই কারণে পুরভোটে যাতে সেই পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তাই এখন থেকেই কাজ শুরু করে দিতে চাইছেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ‘দলবদলু’ বলতে যে তিনি তন্ময় ঘোষের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন, তা বলাই বাহুল্য।
আসলে, একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূলের থেকে টিকিট না পেয়ে গেরুয়া দলে যোগ দেন তন্ময়। বিষ্ণুপুর থেকে বিজেপির হয়ে জিতলেও পরে তৃণমূলে ফিরে আসেন তিনি। সেই এলাকায় সাংগঠনিক নেতা হিসেবে তন্ময়ের বেশ প্রভাব। ফলে দলবদলের জেরে মানুষের উপর প্রভাব পড়া স্বাভাবিক। পুরভোটে যাতে এই ধরণের কোনও ঘটনা না ঘটে, তাও আগের থেকেই হুঁশিয়ারি শানিয়ে দিলেন সায়ন্তিকা।