রাজ্য

পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত বার্ষিক ২ টাকা বেতন নেওয়া বাংলার এই মাস্টারমশাই, গর্বিত গোটা গ্রাম!

আবার গর্বিত বাংলা। এই বছরের পদ্মশ্রী পেলেন পূর্ব বর্ধমানের সুজিত চট্টোপাধ্যায়। তিনি আউশগ্রামের রামনগরের বাসিন্দা। বছরে মাত্র দু’টাকা বেতন ও চারটি ছোট চকলেটের বিনিময়ে অগুনতি ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দেন মাস্টারমশাই!

দীর্ঘদিন ধরেই রামনগরে ‘সদাই ফকিরের পাঠশালা’ চালান সুজিত মাস্টার। এখানেই তার অভিভাবকত্বে পড়াশোনা করেন ৩০০ পড়ুয়া। গতকালই খবর মিলেছে পদ্মশ্রী পাওয়ার খবর। ভাইপো উৎসব চট্টোপাধ্যায়ের মোবাইল ফোনে আসে ফোন। উৎসববাবুর কথায়, ফোনে সুজিতবাবুর নাম জিজ্ঞাসা করে বলা হয়, “আপনি কি সুজিত চট্টোপাধ্যায়? এ বারের পদ্মশ্রী প্রাপকদের তালিকায় আপনি রয়েছেন। আজ তালিকা প্রকাশিত হবে। অনুষ্ঠান দিল্লিতে আগামী মার্চের শেষের দিকে”।

মাস্টারমশাই বিশ্বাসই করতে পারেননি প্রথমে। তাঁর মেয়েও ভাবেন এটি ভুয়ো কল, কেউ বোধহয় এটা মজা করার জন্য করেছে। তারপর সংবাদমাধ্যম থেকে একের পর এক ফোন আসতেই বিশ্বাস হয় চট্টোপাধ্যায় পরিবারের।

রামনগর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক সুজিত চট্টোপাধ্যায়। চল্লিশ বছরের শিক্ষকতার পর গ্রামেই পড়াচ্ছেন প্রায় আঠেরো বছর। দরিদ্র ছেলেমেয়েকে পড়ান শুধুমাত্র ভালবেসে। নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ ও কলেজের প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছাত্রীদের পড়ান তিনি। এরমধ্যে ৮০ শতাংশই ছাত্রী।

লকডাউনে যাদের মোবাইল ছিল তাদেরকে পড়িয়েছেন। নিজের পেনশনের টাকায় কর্মহীন আড়াইশো পরিবারের হাতে চার দফায় মোট ৭৫ হাজার টাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তুলে দিয়েছেন। সাতজন থ্যালাসেমিয়া রোগীর দায়িত্ব নিয়েছেন মাস্টারমশাই।

গোটা গ্রাম এখন তাদের শ্রদ্ধেয় মাস্টারমশাইয়ের জন্য গর্বিত। সকলেই কুর্নিশ জানাচ্ছেন এই নিঃস্বার্থ মানুষটিকে।

debangon chakraborty

Related Articles

Back to top button