রাজবংশীদের উপর লাগাতার অত্যাচার, ভিডিওবার্তায় প্রতিবাদ কোচবিহারের বিজেপি সাংসদের
বিগত বেশ কিছু সময় ধরে উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায়ের উপর ক্রমাগত অত্যাচারের বিরুদ্ধে এবার মুখ খুললেন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক (Nisith Pramanik)। সম্প্রতি তিনি একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন। সেখানেই তাকে রাজবংশী সম্প্রদায়ের উপর ভিন্ন অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে দেখা গেল।
নিয়ে ভিডিও বার্তায় বলেন যে বিগত বেশ কিছু সময় ধরে রাজবংশী সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়েই চলেছে। গঙ্গারামপুরের রাজবংশী মেয়ে প্রমীলা বর্মণকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, কুশমন্ডির রাজবংশী মেয়ে জবা রায়কেও একইভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। বাদ যাননি হেমতাবাদ এর রাজবংশী প্রতিনিধি দেবেন্দ্রনাথ রায়ও।আর সম্প্রতি চোপড়া তে রাজবংশী মেয়ে মাধ্যমিক উত্তীর্ণা ১৬ বছরের এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। রাজবংশী হওয়াটাই কি দোষ নাকি রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ বিজেপিকে দুহাত তুলে আশীর্বাদ করে ২০১৯ সালে তৃণমূলকে উৎখাত করেছিল বলে তাঁদের ওপর শাসক শিবিরের রাগ? আমাদের শরীরে রাজবংশী রক্ত রয়েছে, আমরা ক্ষত্রিয় যোদ্ধা।
আমরা রুখতে জানি, আমরা লড়াই করতে জানি। আমরা যেরকম শান্ত সেরকমই আমাদের ওপর কেউ আঘাত হানলে বা আমাদের আত্মসম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেললে আমরা তলোয়ার হাতে সেটার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেও জানি। দিদিমণি, আমাদের রাজবংশী ভাষাকে আপনি স্বীকৃতি দিতে চাননি, রাজবংশী বিধায়ককে খুন করাচ্ছেন, একের পর এক রাজবংশী মেয়েকে হেনস্থা করা হচ্ছে,গণধর্ষণ করে খুন করা হচ্ছে। আর কত অপমান অত্যাচার করবেন এই নির্দোষ সাদাসিধা মানুষ গুলোর উপর? আপনি এরকম অত্যাচার করে কতদিন রাজবংশীদের করে রাখবেন? আপনার হয়তো রাজবংশীদের ইতিহাস জানা নেই, এই রাজবংশী মানুষরাই কিন্তু মুঘলদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। উত্তরবঙ্গের মাটিতে ইংরেজদের রাজবংশীরাই পা রাখতে দেয়নি। আমরা আপনাদের চোখ রাঙানিতে ভয় পাইনা। তাই চোপড়ার কিশোরীর খুনের বিরুদ্ধে আমরা গর্জে উঠব। আমরা যেরকম বদল আনব, সেরকম প্রতিটা ঘটনার বদলাও নেব।”
স্বাভাবিকভাবেই গেরুয়া শিবির এই বার্তায় জেগে উঠেছে। চোপড়ার গণধর্ষিতা কিশোরীকে অপহরণ করে বিষ খাইয়ে খুন করার ঘটনায় বিজেপি যে চুপ করে থাকবে না তাই এই ভিডিও থেকেই থেকে স্পষ্ট। ইতিমধ্যেই চোপড়া রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছে। পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধে সেখানকার পরিস্থিতি এখন রীতিমত উত্তেজিত। স্থানীয় বাসিন্দারা রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা কিন্তু তিনি এখনো পর্যন্ত এই ব্যাপারে একটা শব্দও খরচ করেননি। এই ঘটনায় আরও ক্ষোভ বাড়িয়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের।
অন্যদিকে শাসক শিবির যদিও এই ভিডিও বার্তার শেষ লাইনটিকে নিয়েই পড়ে আছে। তারা সাফাই গাইছে যে, গেরুয়া শিবিরই বদলার কথা বলছে, শাসক দল সেরকম কিছু বলছে না। যদিও এসব কথা কোনওরকম ভাবেই মানতে রাজি নন চোপড়ার সাধারণ মানুষ। তারা এই নৃশংস ও ঘৃণ্য ঘটনার বিচার নিয়েই ছাড়বেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন।