West Bengal

স্বপ্নপূরণের অঙ্গীকার! পড়াশোনার খরচ চালাতে টোটো কিনলেন তরুণী, রোজগারে সংসারও চলবে, লেখাপড়াও চলবে, কুর্ণিশ লড়াকু তমাকে

বিজ্ঞাপন

সকলেরই তো দু’চোখ ভরা স্বপ্ন থাকে। আর সেই স্বপ্নকে সত্যি করতে পরিশ্রমও করতে হয় ঢের। কিন্তু স্বপ্নের পথে বাধা এলে অনেকেই পথবিচ্যুত হয়ে পড়েন। কিন্তু অনেকে আবার সমস্ত প্রতিকূলতাকে  সঙ্গে নিয়েই স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যান। যেমন চাঁপদানির তমা দত্ত।

বিজ্ঞাপন

স্বপ্ন পূরণ করতে শ্রীরামপুর কলেজে ভর্তি হন তমা। কিন্তু উচ্চশিক্ষা করানোর সামর্থ্য নেই তাঁর বাবার। তাই সেই বাধা দূর করতে টোটো কিনেছেন তমা। পড়াশোনার পাশাপাশি টোটোও চালাবেন তিনি। সেই থেকে যে রোজগার হবে, তাতে তাদের সংসার তো চলবেই, সেই সঙ্গে চলবে তমার পড়াশোনার খরচও। সংসারের ভার কাঁধে তুললেও নিজের স্বপ্নের পথ থেকে কিন্তু একচুলও সরেন নি তমা।

বিজ্ঞাপন

শ্রীরামপুর কলেজের বাংলা অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তমা দত্ত। তমাদের একটি পুরনো টোটো ছিল। সেটা তমার বাবা চালান। কিন্তু তাতে সংসার চালানো যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনই পুরনো টোটো হওয়ায় প্রায় প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে। এর জেরে সেই টোটোর পিছনে খরচ লেগেই রয়েছে। এরপরই তমা ঠিক করেন যে তিনি টোটো কিনবেন। আগেও বাবার টোটো চালিয়েছেন তিনি। এবার বাপ-বেটি মিলে সংসারের হাল ধরতে চান।

বিজ্ঞাপন

চুঁচুড়া থেকে নতুন টোটো কেনেন তমা। তমার লড়াইয়ের কথা শুনে টোটোর দামে কিছুটা ছাড়ও দিয়েছেন টোটোর দোকানের মালিক। তমা জানান, “কাজ না করলে আমার সংসারটা কীভাবে চলবে? সংসারের সঙ্গে সঙ্গে আমার পড়াশোনাটাও তো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই টোটো কিনলাম। কিছু উপার্জন হলে সংসারটাও নিরাপদ থাকবে, পড়তেও পারব। আমি পড়াশোনা করে একটা ভাল চাকরির আশা করি। আপাতত টোটো চালিয়ে সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করছি”।

বিজ্ঞাপন

তমার ছোটো ভাই একাদশ শ্রেণীতে পড়ছে। বোন এবারে মাধ্যমিক দেবে। মেয়ের এই লড়াই যে সকলের মুখে হাসি ফোটাবেই, তা নিয়ে নিশ্চিত তমার মা অঞ্জলি দত্ত। তাঁর কথায়, “লড়াই করে যাচ্ছে মেয়েটা আমাদের জন্য। আমি জানি ও একদিন পড়াশোনা করে ঠিক নিজের পায়ে দাঁড়াবে। ওর স্বপ্নটা পূরণ হবে”।

অঞ্জলিদেবী জানান যে তাঁর মেয়ের এই লড়াইয়ের কথা জানতে পেরে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন চাঁপদানি পুরসভার চেয়ারম্যান সুরেশ মিশ্র, চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁই। মেয়ের এই সংগ্রামে সামিল হতে তিনি নিজের গলার হার খুলে দিয়েছেন। আর তমার জমানো কিছু টাকা ছিল। তা দিয়েই টোটো কেনা।

বিজ্ঞাপন

তমা জানান যে তাদের নিজেদের বাড়ি নেই। ভাড়া বাড়িতে থাকেন তারা। ফলে মাসের শেষে বড় একটা খরচ রয়েছে। কিন্তু বাঁচতে গেলে তো লড়াই করেই বাঁচতে হবে। তাই সমস্ত প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে নিজের চেষ্টায় নিজের স্বপ্নে প্রতিদিন একটু একটু করে রঙ ভরছেন তমা।

বিজ্ঞাপন
Back to top button

Discover more from Khabor24x7

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading