এসএসসি-তে ‘অযোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তালিকায় নাম, চাকরি যাওয়ার ভয়ে আত্মহত্যার পথ বাছলেন শিক্ষিকা

সরকারি চাকরিও যে যে কোনও মুহূর্তে চলে যেতে পারে এর সবথেকে বড় উদাহরণ হল এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি। পরীক্ষায় পাশ না করে মোটা টাকা ঘুষ দিয়ে ‘যোগ্য’দের চাকরি হাতিয়েছেন এমন সংখ্যা নেহাতই কম নয়। এই মামলা এখন কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন। আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যেই অনেক অযোগ্য শিক্ষকদের চাকরি গিয়েছে। আরও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করেছে এসএসসি। সেই অযোগ্য তালিকায় নাম থাকায় চাকরি হারানোর ভয়ে আত্মঘাতী হলেন এক মহিলা। তাঁর পরিবারের এমনটাই দাবী।
পুলিশ সূত্রে খবর অনুযায়ী, মৃত শিক্ষিকার নাম টুম্পারানি মণ্ডল। বয়স ৩০ বছর। ২০১৬ সালে টুম্পাদেবী নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসেছিলেন। ২০১৯ সালে চাকরি পান তিনি। নন্দীগ্রাম ১ নং ব্লকের দেবীপুর মিলন বিদ্যাপীঠের বাংলার শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।
জানা গিয়েছে, টুম্পাদেবীর বাড়ি চণ্ডীপুরের ডিহিকাশিমপুর গ্রামে। কিন্তু তবে স্বামীর সঙ্গে শরিপুর গ্রামের ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। গতকাল, রবিবার সন্ধেবেলা বাড়ির বাইরে ছিলেন স্বামী। সেই সুযোগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন টুম্পাদেবী।
রাতে বাড়ি ফিরে স্বামী তাঁর স্ত্রীকে দেখেন ঝুলন্ত অবস্থায়। পুলিশে খবর দেন তিনি। টুম্পাদেবীকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নবম-দশম শ্রেণীতে নিযুক্ত ‘অযোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তালিকা প্রকাশ করেছে এসএসসি। এই তালিকায় নাম রয়েছে ১৮৩ জনের। এই তালিকায় ৫৮ নম্বরে নাম ছিল টুম্পাদেবীর। পরিবারের অনুমান, চাকরি হারানোর ভয়ে এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন টুম্পাদেবী।
এর আগে টাকা দিয়ে চাকরি না পেয়ে অবসাদের জেরে আত্মহত্যা করেছেন, এমন অনেক ঘটনার কথা শোনা গিয়েছে। তবে টুম্পাদেবীর ঘটনাটা একেবারেই আলাদা। হাইকোর্টের নির্দেশে অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ হওয়ায় তাঁর চাকরি যেতে পারে এই আশঙ্কাতেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।