বন্ধুদের বারণ করেছিলেন চীনের জিনিস ব্যবহার করতে, সেই চীন সেনার হাতেই নির্মমভাবে শহীদ হতে হল রাজেশকে
শেষের কয়েকটা দিন বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপে বারণ করতেন চীনের তৈরি করা জিনিস ব্যবহার করতে। বন্ধুরা তার কথা শোনাও শুরু করেছিলেন। কিন্তু বন্ধুরা যে কথা শুনতে শুরু করেছে সে কথা আর জানতে পারলেন না রাজেশ ওঁরাও। তার আগেই চীনা সেনার হাতে নির্মমভাবে শহীদ হতে হল এই ভারতীয় জওয়ানকে।
রাজেশের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমতো স্তব্ধ তাঁর বন্ধুরা। তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি ছবিটা এখনও জ্বলজ্বল করছে। সব বন্ধুদের নিয়ে একটা গ্রুপ ছিল হোয়াটসঅ্যাপে। সেখানেই বরফে ঢাকা সীমান্তের ছবি পাঠাতেন রাজেশ। সেই ছবিগুলো এখন বন্ধুদের মোবাইল গ্যালারিতে রয়ে গেল, শুধু রাজেশই আর রইল না, এই আক্ষেপই করছেন তাঁর বন্ধুরা।
বন্ধুদের খুব ভালোবাসতেন বীরভূমের এই বীর। প্রতিদিন সবার খবর নিতেন। যখনই বাড়ি ফিরতেন তখনই বন্ধুদের সঙ্গে চলত ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা। এই বছর সরস্বতী পুজো শেষ বারের মত বাড়ি এসেছিলেন রাজেশ। তারপরে যে তাঁকে আর কোনদিনও নিজের চোখে দেখতে পারবেন না বন্ধুরা, এ কথা তারা এখনও মানতে পারছেন না।
লকডাউনের জেরে বাড়ি আসতে পারেননি সেনাবাহিনীর কেউই। এরমধ্যে ভারত-চীন সীমান্তে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়ে যাওয়ায় প্রাণ হারালেন কুড়ি জন সেনা। তার মধ্যে একজন হলেন বীরভূমের বাসিন্দা রাজেশ ওঁরাও।
বীরভূমে রাজেশের একচিলতে বাড়িতে এখন পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের উপচে পড়া ভিড়। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছে পুরো এলাকা। প্রত্যেকেই এই বীর জওয়ানকে একবার শেষবারের মত চোখের দেখা দেখতে চান। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়া গোটা গ্রাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে, ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে গ্রামের বিভিন্ন জায়গা। মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল বাহিনী।
বৃহস্পতিবার সকাল বেলা রাজেশের বাড়ি আসেন সাঁইথিয়া বিধানসভার বিধায়ক লীলাবতী সাহা। প্রথমে শহীদ জাওয়ানের ছবিতে মাল্যদান করেন। তিনি জানান এই গ্রামে রাজেশের একটি আবক্ষ মূর্তি বসানো হবে। প্রশাসনের তরফে শহীদের পরিবারকে সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।