সব্যসাচীর প্রত্যাবর্তনে দ্বিধাবিভক্ত দল, প্রকাশ্যে তৃণমূলের অন্দরের ফাটল
একুশের নির্বাচনের আগেই ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। এবার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরই বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে তাঁর। এরপর গতকাল লক্ষ্মীবারেই ঘর ওয়াপসি করলেন সব্যসাচী।
তিনি এলেন তো ঠিক আছে, কিন্তু তাতে কী ডোলেড় সকলে খুশি? কারণ সব্যসাচীর দলে ফেরা নিয়ে একাধিক তৃণমূল নেতার মধ্যেই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাঁর এই ফিরে একেবারেই মেনে নিচ্ছেন না দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়।
সব্যসাচী বিধাননগরের মেয়র থাকাকালীনই সুজিত বসু ও তাপস চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক সুবিদিত হয় তাঁর। এবার পুরভোটের কথা মাথায় রেখে সব্যসাচীকে দলে ফিরয়ে আনা হলেও দলের মধ্যেই ফাটল ধরেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধায়ক হিসেবে শপথ গ্রহণের পর তাঁর সঙ্গে দেখা করেন সব্যসাচী। এরপরই তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন তিনি, এমনটাই জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়য়। এদিকে এদিন সব্যসাচীর হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিয়ে ফিরহাদ হাকিম বললেন, “পইপই করে বলে ছিলাম তুই দল ছাড়িস না”। বলে রাখি, সব্যসাচী বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, এই জল্পনা যখন তৈরি হয়েছিল, তখন একাধিকবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ফিরহাদ। কিন্তু সব্যসাচী তাঁর দল ছাড়ার সিদ্ধান্তে একেবারে অনড় ছিলেন। কিন্তু এবার তাঁর দলে ফিরে আসাতে দলের অন্দরেই ফাটল ধরল।
এদিন বিধানসভায় সেই ফাটলের ছবি ধরা পড়ে। সুজিত বসু যখনই দেখলেন সব্যসাচী দত্ত দলে ফিরছেন তখন তিনি বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান। এদিন বিধানসভা ত্যাগ করতে দেখা যায় তাপস চট্টোপাধ্যায়কেও। বেশ অসন্তোষ প্রকাশ করে সুজিত বসু ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, “যার সঙ্গে রাজনীতি করা যায় না, তার সঙ্গে একই জায়গায় বসতেও পারব না”।
অনেক চেষ্টা করে শেষমেশ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরেই তৃণমূলে ফিরলেন সব্যসাচী। দলে যোগ দেওয়ার পর প্রকাশ্যেই বলেন, “দলের সঙ্গে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, যা থেকে আবেগতাড়িত হয়ে অন্য দলে গিয়েছিলাম। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের আমাকে দলে গ্রহণ করলেন। বাকিরাও সবাই স্বাগত জানালেন। দল যেভাবে বলবে সেভাবেই আগামী দিনে কাজ করব”।
এদিকে দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ও বিশেষ খুশি নন সব্যসাচীর প্রত্যাবর্তনে। ক্ষোভ জাহির করেই তিনি বললেন, “ যারা সদ্য নির্বাচনে এরকমভাবে আমাদের গালাগাল দিল। যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করল, তারা যদি দলে আসে তাহলে আমাদের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। কর্মীদের মনোবল ধাক্কা খায়। যারা নিষ্ঠাবান কর্মী, তারা তো এই বিষয়ে হতাশ হবেনই”।