বিরোধীদের হাত-পা গুঁড়িয়ে দিন, নিদান আরাবুল ইসলামের, থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি, বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরে ফের বিতর্কে তৃণমূল নেতা

মাঝেমধ্যেই নানান বিতর্কিত মন্তব্য করেই থাকেন তিনি। আর এর জেরে চর্চার মধ্যেও উঠে আসেন। এবার ফের বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। নাম না করেই এবার আইএসএফ কর্মীদের হাত-পা গুঁড়িয়ে দেওয়ার নিদান দিলেন তিনি। এর সঙ্গে থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দেন তৃণমূল নেতা।
গত মঙ্গলবার ভাঙড়ের গানিরাইট গ্রামে ঘটে বোমা বিস্ফোরণ। এই বিস্ফোরণের জেরে গুরুতর জখম হন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সরিফুল মোল্লার স্ত্রী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিবাদ শুরু হয়। আইএসএফের তরফে অভিযোগ করা হয় যে বাড়িতে বোমা মজুত করে রেখেছিল তৃণমূল কর্মী। সেই বোমা ফেটেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। অন্যদিকে, সরিফুল মোল্লা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আইএসএফ তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। তাতেই তাঁর স্ত্রী জখম হয়েছেন।
এই ঘটনার পরই তার বাড়িতে ছুটে যান ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা, আরাবুল ইসলাম-সহ অন্যান্য নেতারা। এই ঘটনার পর সরিফুল মোল্লা ১৬ জন আইএসএফ কর্মীর বিরুদ্ধে বাড়িতে বোমা মারার অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত আইএসএফ কর্মীদের গ্রেফতারের দাবীতে গতকাল, বৃহস্পতিবার গানিরাইট গ্রামে প্রতিবাদ মিছিল ও জনসভা করে তৃণমূল। ওই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক শওকাত মোল্লা, আরাবুল ইসলামরা।
এই সভা থেকেই আরাবুল ইসলাম বলেন, “যে সমস্ত আইএসএফ কর্মীরা আমাদের দলীয় কর্মীর বাড়িতে বোমা ছুঁড়ল তাঁরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ অবিলম্বে তাঁদের গ্রেফতার না করলে আমরা থানা ঘেরাও করব। আমরা জানি, এখানে কারা কীভাবে সন্ত্রাস করছে। তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে থানা ঘেরাও করা হবে”। বিরোধীরা তৃণমূলকে খারাপ কথা বললে তাদের হাত-পা গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তৃণমূল নেতা।
এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ-র তদন্তের দাবী তুলেছেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তাঁর সেই দাবীর প্রসঙ্গে ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা এই সভা থেকেই বলেন, “একজন পরিযায়ী পাখি মাঝেমধ্যে এখানে আসেন। তিনি কী জানেন, সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে ওরা আমাদের কর্মীর বাড়িতে বোমা মেরেছে। ইতিমধ্যে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশকে অনুরোধ করব নিরপেক্ষ তদন্ত করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে”।
এখানেই শেষ নয়, তাঁর আরও সংযোজন, “ভাঙড়ের মাটিতে লড়াই হবে। ১ ইঞ্চি জমি ছাড়া হবে না। আপনারা বুক চিতিয়ে লড়াই করুন। যুদ্ধের ময়দানে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে তারা বিশ্বাসঘাতক। আমাদের দলের কেউ কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করছে। আমি তাদেরকে অনুরোধ করব এমন কাজ করবেন না”।
তৃণমূল নেতাদের এহেন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, “যাদের বাড়িতে বোমা মজুত করা ছিল, পুলিশ কেন তদন্ত করে তাঁদেরকে গ্রেফতার করছে না? আমি চাই প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করুক। যদি কোনও কারণে নিরাপরাধ কোনও মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় তাহলে আমি এর বিরুদ্ধে আদালতে যাব। যারা প্রকৃত দোষী তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হোক। ওরা ওদের পুলিশের বিরুদ্ধে থানা ঘেরাও করতেই পারে। চোরের মায়ের বড় গলা”।