‘পাঁচ লক্ষ টাকা না দিলে ছাত্রীদের প্রকাশ্যে ধ’র্ষ’ণ করা হবে’, হুমকি চিঠি প্রধান শিক্ষিকাকে, অভিযোগের তীর তৃণমূল নেতার দিকে
তোলাবাজির টাকা যদি না দেওয়া হয়, তাহলে স্কুলের ছাত্রীদের ধ’র্ষ’ণ (rape) করা হবে বকে হুমকি চিঠি দেওয়া হল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে (head mistress)। অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতার (TMC leader) আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া গার্লস হাইস্কুল। স্কুলের তরফে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে যার আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সে তৃণমূল নেতা তীর্থঙ্কর কুণ্ডুর (Tirthankar Kundu) দাবী তিনি অভিযুক্ত হরপ্রসাদ বিশ্বাসকে নাকি চেনেনই না।
জানা গিয়েছে, গতকাল, বুধবার বাঁকুড়া গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুমনা ঘোষের কাছে একটি চিঠি আসে। সেই চিঠিতে যে হুমকি দেওয়া হয়, তা পড়ে রীতিমতো ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে যান প্রধান শিক্ষিকা। এমন হুমকিও যে আসতে পারে, তা তাঁর কল্পনারও অতীত। এরপরই তড়িঘড়ি এই হুমকি চিঠি নিয়ে তিনি স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
সেই চিঠিতে লেখা ছিল, “গত ভোটের ফলাফলের পর আমাদের বাঁকুড়া জেলার ছাত্র পরিষদের সভাপতি তীর্থঙ্কর কুণ্ডুর নেতৃত্বে আগামীদিনে ছাত্র পরিষদ ঢেলে সাজানোর জন্য আমাদের প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ। তাই আপনাদের প্রত্যেককে জানানো হচ্ছে, আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে ৮৭১৪০৭৬৭৭৬ নম্বরে যোগাযোগে পর ৫ লক্ষ টাকা জমা করে দিন আর তা না হলে আপনাদের প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগানো হবে এবং ছাত্রীদেরকে প্রকাশ্যে ধ’র্ষ’ণ এবং প্রাণনাশ করা হবে”।
এমন হুমকি চিঠি পেয়ে ভয় পেয়ে যান সুমনাদেবী। এই গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবী করেছেন স্থানীয়রা। এই প্রসঙ্গে বাম ছাত্র সংগঠনের সম্পাদক অনির্বাণ গোস্বামী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে, তা নিন্দনীয়। বর্তমানে যে চিঠির কথা উঠে আসছে, তা মেনে নেওয়া যায়না। শিক্ষাক্ষেত্রে এই অরাজকতা আমরা হতে দেব না, প্রয়োজনে আন্দোলন করব”।
অন্যদিকে, বিজেপির তরফে এই বিষয়ে জানানো হয়, “আমরা সকলেই পড়ুয়াদের পাশে রয়েছি। শিক্ষাক্ষেত্রে যেভাবে শাসকদল বর্তমানে গোটা বাংলায় অরাজকতা সৃষ্টি করেছে, আমরা তা মেনে নেব না”।
তবে যার আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই তৃণমূল নেতা তীর্থঙ্কর কুণ্ডু এই গোটা বিষয়টি অস্বীকার করে দাবী করেছেন যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তিনি চেনেন না। এই নিয়ে পাক্তা বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবী শাসকদলকে হেনস্থা করার জন্যই বিরোধী দলের তরফে এমনটা করা হয়েছে।
তীর্থঙ্করবাবু বলেন, “কয়েকদিন পূর্বে মেদিনীপুরেরব একটি কলেজে একই রকমের চিঠি পাঠানো হয় আর এবার বাঁকুড়া গার্লস হাইস্কুলেও একই ঘটনা ঘটল। আমি দুই ক্ষেত্রেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। তাছাড়া হরপ্রসাদ বিশ্বাস নামে কোনো ব্যক্তিকে আমি চিনিনা। যে এই কাজ করে থাকুক না কেন, আমাদের দলকে বদনাম করার জন্য এটা করা হয়েছে। অভিযুক্তর শাস্তির দাবী জানাই”।