নিজের বাড়ির বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য ট্রান্সফরমার বসাতে দিনমজুরের বাড়ি ভাঙলেন তৃণমূল নেতা, বাধা দেওয়ায় গৃহকর্ত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধর

নিজের বাড়িতে বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য দরকার ট্রান্সফরমার। সেই ট্রান্সফরমার বসানোর জন্য গরীব দিনমজুরের বাড়ি ভেঙে দিলেন তৃণমূল নেতা। পই বাড়ির মহিলা বাধা দিতে গেলে তাঁকে প্রায় বিবস্ত্র করে রাস্তায় ফেলে মারধর করে নেতার অনুগামীরা। বাড়ির দেওয়াল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী ভয়ে এখন ঘরছাড়া।
ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংরেজবাজার এলাকায়। অভিযোগ, মিল্কি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূল নেতা সারিফুদ্দিন সবজি। ওই পরিবারের গৃহবধূর অভিযোগ, তৃণমূল নেতা সারিফুদ্দিন প্রচুর টাকা খরচ করে বাড়ি তৈরি করছেন। কিন্তু ট্রান্সফরমারের জন্য বাড়ির নকশা নষ্ট হচ্ছে। তাই নতুন ট্রান্সফরমার বরাদ্দ হয় আর সেই ট্রান্সফরমার ওই দিনমজুরের বাড়ির সামনে বসানো হবে বলে স্থির করেন ওই তৃণমূল নেতা।
কিন্তু এর জেরে দিনমজুরের বাড়ি ভাঙা পড়বে। এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় পরিবারের মহিলাকে অর্ধনগ্ন করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরও বাধা দিতে যান ওই মহিলা। কিন্তু তাঁর কান্নাকাটি, আর্তনাদের কোনও তোয়াক্কাই করে না ওই তৃণমূল নেতা। চোখের সামনে ওই বাড়ির দেওয়াল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
আহত এই দম্পতির নাম সালিমা বিবি ও জুমারাতি সবজি। তারা পেশায় দিনমজুর। ওই দম্পতির অভিযোগ, বাড়ির দেওয়াল ভাঙার পরও ক্ষান্ত হয়নি তৃণমূল নেতা। রাতের অন্ধকারে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও তার দলবল বাড়িতে ঢুকে ওই দম্পতিকে মারধর করে বলেও অভিযোগ। মহিলার শ্লীলতাহানি ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এই আতঙ্কে এখন ঘরছাড়া ওই দম্পতি।
এখানেই তাদের ভোগান্তির শেষ নয়। জানা গিয়েছে, ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে অভিযোগ জানান ওই নিগৃহীত দম্পতি। কিন্তু পুলিশ তাদের অভিযোগ না নিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেয় বলেও জানা গিয়েছে।
এদিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবী, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তাঁদের দাবী, যে দলেরই সদস্য হোন, এমন ঘটনা কেউই সমর্থন করে না। আবার অভিযুক্ত নেতার কাছ থেকে দূরত্ব নিয়েছেন তাঁরা। এই ঘটনায় বিজেপির কটাক্ষ, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া, বিবস্ত্রকে মার, বাড়ি ভাঙচুর করা, এসবই তৃণমূলের সংস্কৃতি। গোটা রাজ্যে এই কাণ্ডই জুড়ে চলছে। আর মালদহ জেলাও তার অন্যথা নয়। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতারা।