অধ্যক্ষা বসে পাশের সোফায়, আর অধ্যক্ষার চেয়ারে তৃণমূল বিধায়ক, ছবি সামনে আসতেই তুমুল শোরগোল রাজনৈতিক মহলে

সম্প্রতি, রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে একের পর এক দুর্নীতির কথা উঠে এসেছে। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Scam Case) মামলা নিয়ে এখন গোটা রাজ্য সরগরম। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), রাজ্য দফতরের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Paresh Adhikari) নাম জড়িয়েছে এই মামলায়। আর এরই মধ্যে উঠে এল এক ছবি, যা ফের এবার এই শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির (corruption) বিতর্কে ঘি ঢেলেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুর কলেজে। বিজেপির অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এই কলেজের একটি ছবি শেয়ার করা হয়েছে যা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, শান্তিপুর কলেজে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে রয়েছেন শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী। আর পাশের সোফায় বসে রয়েছেন ওই কলেজের অধ্যক্ষা। এই ছবি শেয়ার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভাইরাল।
Shantipur MLA Braja Kishore Goswami sits on the chair of Shantipur College’s Principal.
This is an act of disrespect-disrespecting the Chair and the Educational Institute.
This incident serves as a microcosm of the collapse of the Bengal's education system. pic.twitter.com/gkSgphU1RY
— BJP Bengal (@BJP4Bengal) May 25, 2022
এই ছবি নিয়ে নেটিজেনরা নানান ধরণের মন্তব্য করেছেন। বিরোধীদের তরফে এই নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে শাসক দলকে। এক জনৈক নেটিজেন এই ছবিতে কমেন্ট করেন, “ওই চেয়ারের ঠিক পেছনে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি রয়েছে। হায়রে রাজনীতি! এই তৃণমূল শিষ্টাচার জানে না। শুধুমাত্র শিক্ষাজগতে রাজনীতিকরণ বোঝে। কি বলছেন তৃণমূল আশ্রিত শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, অভিভাবকরা”?
কিন্তু কেন অধ্যক্ষের আসনে বসেছেন তৃণমূল বিধায়ক। এই বিষয়ে তাঁর সাফাই, “কলেজের প্রথম যেদিন গর্ভনিং বডি তৈরি হয়েছিল সেদিন আমি গিয়েছিলাম। এই ছবিটি ১৮ তারিখ বেলা দেড়টা নাগাদ তোলা হয়েছিল। ওই দিন অধ্যক্ষা নিজের ঘরে কিছু কথাবার্তা বলার জন্য আমন্ত্রণ জানান এবং বারবার অনুরোধ করেন ওই চেয়ারে বসার জন্য এবং তা প্রকাশ্যে। কিন্তু আমি প্রত্যেকবার বারণ করি। আমি তাঁকে বারবার বলি ওই চেয়ারে আমি বসতে পারি না। তিনি আমাকে নিতান্ত মানবিকতার সহিত হাতজোড় করে বলেন আমি বলছি আপনি ওই চেয়ারে বসুন। এতে কোনও অসুবিধা হবে না। এরপর তাঁর সম্মান রাখতে আমি ওই চেয়ারে বসি”।
তাঁর সংযোজন, “যা কিছু ঘটেছে একাধিক লোকের সামনে হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন সেই ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। এরপরেই বাম মানসিকতা সম্পন্ন কর্মীরা এই ছবিকে ভাইরাল করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, অধ্যক্ষা নিজের বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছেন নিতান্তই মানবিকতার খাতিরে তিনি আমাকে ওই চেয়ারে বসতে বলেছিলেন”। তবে বিধায়ক মুখে যতই এমন সাফাই দিন না কেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে বেশ উত্তাপ ছড়িয়েছে।