‘পুরোহিত চোর হলে দেবতা কী চোর হন, আমি চোর হতে পারি, মমতা চোর হবেন কেন’, নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে যুক্তি শোভনদেবের
নিয়োগ দুর্নীতি (recruitment scam) নিয়ে রাজ্য সরকার বর্তমানে বিধ্বস্ত। নিজেদের দুর্নীতির সাফাই দিতে বাম আমলের দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে আনছেন শাসক দলের নেতারা। আর তা করতে গিয়েই দুর্নীতি নিয়ে সাফাই দিতে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chatterjee) বলেন, “পুরোহিত চোর হলে দেবতা কী চোর হবেন, আমি চোর হতে পারি, মমতা (Mamata Banerjee) চোর হবেন কেন”।
এক কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বাম আমলে পলিটেকনিক কলেজে অন্তত ২০০ অধ্যাপককে বেআইনিভাবে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর প্রশ্ন প্রয়োজনীয় ৬৫ শতাংশ নম্বর না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে চাকরি পেলেন অধ্যাপকরা? এই বিষয়ে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হতে গেলে মাধ্যমিক থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পর্যন্ত ৫০ শতাংশ নম্বর থাকা প্রয়োজন। কিন্তু যেখানে রজত বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁর কোনও স্তরেই ওই নম্বর ছিল না। এরকম অনেকগুলো কেস রয়েছে। কোথায় কোথায় দুর্নীতি হয়েছে। আমার কাছে তথ্য রয়েছে”।
কিছু নথি নিয়ে পলিটেকনিক কলেজের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শোভনদেববাবু। তাঁর বক্তব্য, “২০০ অধ্যাপককে নিয়োগ করেছিল ওরা। অধ্যাপক নিয়োগ সেসময় পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা ছাড়া হয় না। তাঁদের ৬৫ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। কিন্তু যাঁরা নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাঁদের একজনেরও এই নম্বর ছিল না। এখন আমরা যদি বলি, সিপিএমের আমলে কারা চাকরি পেয়েছিল, তাঁদের তাড়িয়ে দেও, সেটা হয় না”।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যেভাবে শাসক দলের একাধিক তাবড় তাবড় নেতার নাম জড়িয়েছে, তাতে তৃণমূল বেশ অস্বস্তিতে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্নীতির দায় একাবারে ঝেড়ে ফেলতেও পারছে না তৃণমূল। সেই কারণেই এবার পাল্টা বাম আমল নিয়ে টানাটানি করছে তারা। আবার তৃণমূল সাধারণ মানুষকে এমন বার্তাও দিতে চাইছে যে কোনও ব্যক্তি যদি দুর্নীতি করে তাহলে সেই দায় গোটা দলের নয়।
সেই কারণেই হয়ত শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “সমাজের মধ্যে ভালো খারাপ রয়েছে। সৎ ও অসৎ দুটো শব্দই রয়েছে। কিছু অসৎ লোক নিশ্চয়ই আছে, তার জন্য তো গোটা দল নষ্ট হয়ে যায় না। একটা মন্দিরে পুরোহিত চোর, দেবতা কি চোর হয়ে যায়? অপবিত্র হয়ে যায়? যাঁকে আমরা দেবতা মনে করি, সত্যিই শ্রদ্ধা করি, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন চোর হবেন? আমি চোর হতে পারি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন চোর হবেন”।