মনরেগা প্রকল্পের টাকা বাংলাদেশে পাচার! সৌজন্যে তৃণমূল পঞ্চায়েত নেতা

ফের এক গভীর চক্রান্তের খবর মিলল এক তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, গ্রামীণ চাকরি প্রকল্পের নাম করে বেশ কিছু সুবিধাভোগী মানুষ কেন্দ্র সরকারের ৭ লক্ষ টাকা নিয়ে পাচার করেছে বাংলদেশে। এই গ্রামীণ চাকরি প্রকল্প কেন্দ্র সরকারের চালু করা মহাত্মা গান্ধী রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি আইনের মধ্যেই পড়ে। গ্রামীণ চাকরি প্রকল্পের প্রমাণ দেখানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে বেশ কিছু নকল চাকরির কার্ডও।
ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার নবগ্রাম থানা অঞ্চলের অন্তর্গত গুরাপশলা গ্রামে। এই গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সামসুল আরফিনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে টাকা তোলার জন্য তিনি তাঁর আত্মীয়দের নামে অনেকগুলি চাকরির কার্ড বানান, যার মধ্যে ১৩ খানা কার্ডে রয়েছে বাংলাদেশীদের নাম। এই একই সুবিধাভোগীরা নামে বিভিন্ন জায়গায় নাম ভাঁড়িয়ে বিভিন্ন চাকরির কার্ড বানান। এই চাকরির জন্য প্রাপ্ত টাকা তোলা হয়েছে ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিস থেকে।
এই বিষয়ে জানাজানি হওয়ার পর নবগ্রাম অঞ্চলের প্রাক্তন বিডিও আধিকারিক আরফিন ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের নামে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগ দায়ের করা হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই অভিযোগপত্রের একটি কপিও দেখেছে। কিন্তু অভিযোগ দায়ের করার পরও আরফিনের বিরুদ্ধে কোনওরকম আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।
উলটে, আরফিন কলকাতা হাইকোর্টে নিজের জামিনের জন্য আবেদন করে। কিন্তু তার সেই আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকরবোর্ট। কিন্তু অভিযোগ, এই পরেও রাজ্যের প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। অনেক চেষ্টার পরও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় না।
এরপর নবগ্রামে যখন নতুন বিডিও আধিকারিক আসেন, তিনি জানতে পারেন আরফিনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৮৬, ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু তিনি অভিযোগ তোলেন যে এতকিছুর পরেও কেন আরফিনকে গ্রেফতার করা হল না।
মুর্শিদাবাদে ৬৬.২৮ শতাংশই রয়েছে সংখ্যালঘু মানুষ, আর এই জেলার সীমান্তেই বাংলাদেশ সীমান্ত। এই কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ কড়া আরও সহজ হয়। নতুন বিডিও আধিকারিক দাবি করেন যে উক্ত উপপ্রধান যদি সত্যিই অপরাধী হন, তাহলে যেন তাঁকে অবশ্যই গ্রেফতার করা হয়।
তবে এই বিষয়ে ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মীর বাদাম আলি বলেন, “আরফিন তাঁর কিছু সাঙ্গোপাঙ্গদের সঙ্গে মিলে সরকারের টাকা আত্মসাৎ করেছে। কিন্তু তাদের মধ্যে বেশীরভাগই নাবালক। তৃণমূল নেতা বাংলাদেশীদের সাহায্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের টাকা থেকে”। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও জেলা পুলিশের কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে আরফিনকে খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।