একবেলা পঞ্চায়েত প্রধান, অন্যবেলায় লটারির টিকিট বিক্রি, সৎ পথে ‘দিদি’র দল চালানোর অঙ্গীকার দেগঙ্গার ব্যতিক্রমী তৃণমূলের হারান দাসের
বর্তমানে এখন রাজ্যে একাধিক দুর্নীতির (corruption) কথা উঠে আসছে। নিম্নস্তরের নানান নেতা, পঞ্চায়েত প্রধান (panchayet head) যাদের হয়ত কিছুদিন আগেও দৈন্যদশা ছিল, তাদের আজ বিশাল প্রতিপত্তি, বিশাল অট্টালিকার মালিক তারা। শাসক দলে থেকে দুর্নীতি করে ভুরিভুরি অর্থ কামানোর নজির বাংলা (West Bengal) কম দেখেনি। এই নিয়ে বিতর্কও চলেছে ঢের।
তবে এদের মধ্যেই ব্যতিক্রমী হলেন উত্তর ২৪ পরগণার দেগঙ্গার হাদিপুর জিকরা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হারান দাস। তিনি কাগজেকলমে পঞ্চায়েত প্রধান হলেও, তাঁর সংসার চলে লটারির টিকিট বিক্রি করে। পঞ্চায়েত প্রধান হলেও সংসারের জল টানতে তাঁর পেশা লটারির টিকিট বিক্রি। এই করেন জীবন অতিবাহিত করছেন তিনি।
একদিকে যখন একাধিক পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি করে আর্থিক উন্নয়নের নজির সামনে এসেছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একেবারে উল্টোপথেই হাঁটতে দেখা গেল হারান দাসকে। গত ৩০ বছর ধরে দেগঙ্গার হাদিপুর জিকরা পঞ্চায়েত অফিসের সামনেই লটারির টিকিট বিক্রি করেন তিনি। সেই লটারির টিকিট বিক্রি করার টাকা থেকেই সংসার চলে তাঁর।
পঞ্চায়েতের কাজ সামলানোর পর বাকি সময়টা টেবিল পেতে লটারির টিকিট বিক্রি করাই তাঁর একমাত্র কাজ। লটারির টিকিট বিক্রিতে এমনিতে মোটামুটি ভালোই লাভ রয়েছে। এভাবেই এদিক-ওদিক করে মোটামুটিভাবে চলে যায় হারান দাসেরও।
সংবাদমাধ্যমে হারান দাস জানান, পঞ্চায়েত থেকে তিনি যে ভাতা পান, তা দিয়ে সংসার ঠিকমতো চলে না। সেই কারণেই জীবনযাপনের জন্য অন্য কোনও পেশার উপরই নির্ভর করতে হয়েছে তাঁকে। আর পঞ্চায়েত প্রধান হয়ে ভাতা ছাড়া অন্য কোনও উপায়ে অর্থ উপার্জন করার সেই অভিপ্রায় একেবারেই নেই তাঁর।
হারান দাসের কথায়, তিনি ‘দিদি’র দল করে সৎ পথেই কাজ করতে চান। তবে তিনি এও জানান যে এর জন্য অনেকের কাছেই উপহাস্য হতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু তাতে তাঁর কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। সৎ পথে থেকে খেটে উপার্জন করেও জীবন চালাতে চান বলে কঠোর পন নিয়েছেন দেগঙ্গার হারান দাস।