তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে মারধরের চেষ্টা, প্রাণে মারার হুমকি দলেরই নেতাদের, বিস্ফোরক অভিযোগে চাঞ্চল্য জামালপুরে

সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভোট যতই এগিয়ে আসছে, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল যেন আরও বেশি প্রকাশ্যে আসছে। এবার তৃণমূলের এক অন্তঃসত্ত্বা জনপ্রতিনিধিকে প্রাণে মেরে ফেলাএ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতাদেরই বিরুদ্ধে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে।
মেহেমুদ খাঁন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন এতদিন। দল মেহেমুদ খাঁনকে ব্লক তৃণমূলের সভাপতি করার পর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। গত শুক্রবার পঞ্চায়েত সমিতির নতুন সভাপতি নির্বাচন ছিল।
আর সেই নির্বাচনে তাঁদের পক্ষের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন অরবিন্দ ভট্টাচার্য। মেহেমুদ খাঁন তাঁর অনুগত ভূতনাথ মালিককে প্রার্থী করেন। এই নির্বাচন বয়কট করেছিলেন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির একজন নির্বাচিত সদস্য চৈতালী হাত।
চৈতালি দেবীর দাবী, সভাপতি নির্বাচনের ভোটাভুটিতে অংশ নিতে গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০ টায় সমিতিতে যান তিনি। কিন্তু তিনি ও বেশ কিছু সদস্য ভোট বয়কট করেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ না নিয়ে সামিতির ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে যান তারা।
অভিযোগ, সেই সময়ে তাঁকে দেখে অকথ্য ভাষায় গালাগালি দেওয়া শুরু করেন মেহেমুদ খাঁন গোষ্ঠীর তিন তৃণমূল নেতা তাবারক আলী মণ্ডল,শেখ শাহাবুদ্দিন ওরফে দানি ও তাপস ডকাল। চৈতালি দেবীর অভিযোগ, তাঁকে মারধর করারও চেষ্টা করেন ওই তিন তৃণমূল নেতা। খুন করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে যায়।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে কেউ কোন অভিযোগ জানায়নি। তবে আমি খোঁজ নেব”। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছেন আইএনটিটিইউসির ব্লক সভাপতি তাবারক আলী মণ্ডল। তাঁর কথায়, “এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। গোটা বিডিও অফিস চত্বর পুলিশে ছয়লাপ ছিল। আসলে ভোটাভুটিতে ভূতনাথ মালিক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ওদের মুখ পুড়েছে। তাই এইসব মিথ্যা অভিযোগ তুলে ওরা মান বাঁচানোর চেষ্টা করছে”।
অন্যদিকে, নবনির্বাচিত সমিতির সভাপতি ভূতনাথ মালিক দাবী করেন, ভোটাভুটিতে চৈতালী হা দের পক্ষে মাত্র ১৪ জন সদস্য ছিলেন। আর তাঁকে সমর্থন করেন ২২ জন্য সদস্য। পরাজয় নিশ্চিত বুঝে চৈতালি হাত-সহ তাদের পক্ষের সবাই ভোটে অংশ নেয়নি। ভূতনাথের দাবী, হারের লজ্জা ঢাকতে চৈতালী হাতকে দিয়ে এমন মিথ্যা অভিযোগ করিয়ে ওর পক্ষের নেতারা মুখ রক্ষার কৌশল নিয়েছেন। তৃণমূলের এই গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করতেও ছাড়ে নি বিজেপি।