রাজ্য

লক্ষ্মী ভাণ্ডার বিভ্রাট! লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকছে না ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে, খোঁজ নিতেই চক্ষু চড়কগাছ, ‘বড় দুর্নীতি চলছে’, দাবী খোদ তৃণমূল কর্মীরই

মহিলাদের স্বাবলম্বী করার জন্য রাজ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যেক মাসে এই প্রকল্পের আওতায় থাকা মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকে ৫০০ টাকা। কিন্তু এক প্রতিবন্ধী মহিলা এবার অভিযোগ তুললেন, লক্ষ্মী ভাণ্ডারের টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে না ঢুকে, ঢুকছে অন্য এক অ্যাকাউন্টে। এই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য এলাকায়।

ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির পাহাড় পুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানকার বাসিন্দা বুলু দেবনাথ ও তাঁর স্ত্রী জয়ন্তী দেবনাথ দুজনেই প্রতিবন্ধী ও তৃণমূল কর্মী। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদন করেছিলেন জয়ন্তী। এরপর থেকেইতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে কী না, তা দেখার জন্য প্রায়ই তিনি মেয়েকে বলতেন মোবাইল চেক করার জন্য। অন্যরা টাকা পেলেও, তিনি টাকা পান নি।

এর জেরে জয়ন্তীদেবী খোঁজ নিতে বিডিও অফিসে যান। সেখানে খোঁজ নিতেই জানতে পারেন তাঁর টাকা অন্য এক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। এই নিয়ে তিনি বারবার পঞ্চায়েতে অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগ, পঞ্চায়েতের তরফে তাদের কোনও পাত্তা না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হন তারা।

জয়ন্তী দেবনাথের অভিযোগ, “আমি বিডিও অফিসে গেলে জানতে পারি, আমার টাকা অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। আমার গ্রামীণ ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট অথচ যিনি টাকা পাচ্ছেন তাঁর স্টেট ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আমার সন্দেহ এর মধ্যে বড় কোনও দুর্নীতি রয়েছে”।

তিনি আরও জানান, “আমি নিজেও তৃণমূল করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের জন্য এত কিছু করছেন কিন্তু মাঝখানে পঞ্চায়েত আর কিছু মানুষের জন্য আমি লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাচ্ছি না”।

জয়ন্তীর স্বামী বুলু দেবনাথ পেশায় ফেরিওয়ালা। তিনি বাসে বাসে সলটেড বাদাম বিক্রি করেন। তিনি দীর্ঘদিনের তৃণমূল কর্মী। তাঁর দাবী, এই পঞ্চায়েতকে জেতানোর তিনি ও তাঁর স্ত্রী দু’জনেই ভোটে প্রচুর খেটেছেন।

এই ঘটনায় বুলু দেবনাথ বলেন, “আমার স্ত্রীর কাছ থেকে কাগজ নিয়ে পঞ্চায়েত কাগজ আটকে রেখেছিল। এখন দেখতে পাচ্ছি ওরা নিজেদের লোকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দিয়ে দিয়েছে। আমাদের গ্রামে শুধু আমরাই নই, আরও অনেকেই এই দুর্নীতির শিকার হয়েছে। তারাও টাকা পাচ্ছে না”।

পাহাড় পুর গ্রামপঞ্চায়েতে উপ প্রধান বেনুরঞ্জন সরকার এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে যিনি ফর্ম ফিলাপ করেন, তিনি যে অ্যাকাউন্ট নম্বর দেন সেই অ্যাকাউন্টই টাকা ঢোকে”। তাই এই ক্ষেত্রে কী হয়েছে, তা তদন্ত না করে তিনি কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।

 পরে তিনি আরও বলেন, “যিনি আপনাদের কাছে এই অভিযোগ করেছেন, তাঁর মানসিক বিকৃতি আছে। তিনি সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা পান, কিন্তু তিনি বলে বেড়ান কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা পাননি”।

Related Articles

Back to top button