’২০ বছর ধরে দল করছি, বিধায়ক সামান্য সম্মানটুকুও দেন না, গাড়ির কাচ তুলে বেরিয়ে যান’, ‘দিদির দূতের’ কাছে এবার অভিযোগ তৃণমূল কর্মীদেরই

পঞ্চায়েত নির্বাচনকে (Panchayet Election) পাখির চোখ করে তৃণমূল ঘোষণা করেছে ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ (Didir Suraksha Kawaj) নামের নতুন কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতে ‘দিদির দূতরা’ জেলার নানান জায়গায় যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনতে। আর সেই কর্মসূচিতে গিয়েই আমজনতার ক্ষোভের মুখে পড়ছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। এবার ‘দিদির দূত’ হিসেবে কর্মসূচিতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়লেন সাংসদ অসিত মাল (Asit Mal)। এলাকার লোকজনের অভিযোগ, “বিধায়ক তো এলাকায়ই আসেন না। ভোটের আগে চিনতেন। ভোটের পর ফোন করলে ফোনও ধরেন না”। তৃণমূল কর্মীদের একাংশই অভিযোগ করেন যে বিধায়ক গাড়ির কাচ তুলে বেরিয়ে যান।
আজ, শনিবার বীরভূমের ময়ূরেশ্বর বিধানসভা এলাকায় ‘দিদির দূত’ হয়ে কর্মসূচিতে যান বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল। এদিন খানিকক্ষণ এলাকা ঘুরে বাসুদেবপুর প্রাথমিক হাসপাতালে যান সাংসদ। হাসপাতালের সামনে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে যেতেই কার্যত ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেন, “হাসপাতালে কোনও পরিষেবা পাওয়া যায় না। ছোটখাটো অসুখ হলেও সিউড়ি এবং রামপুরহাট হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়”।
এর পাশাপাশি, তাঁরা ময়ূরেশ্বর বিধানসভার বিধায়ক অভিজিৎ রায়ের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ তোলেন। গ্রামবাসীর অভিযোগ, “বিধায়ককে সচরাচর এলাকায় দেখা যায় না। কখনও-সখনও এলাকায় তাঁর গাড়ি দেখা যায়। তবে তিনি জানলার কাচ তুলে চলে যান। এলাকার কোনও উন্নয়নে শামিল হন না”।
নিজেকে তৃণমূল কর্মী বলে দাবী করে এক ব্যক্তি বলেন, “২০ বছর ধরে দল করছি। সিপিএম ছেড়ে দলে এসেছিলাম। কোনও জিনিস পাই না। একটা কথা বলে না, একটু সম্মান দেয় না। বিধায়কের জন্য গ্রামে গ্রামে মিটিং করেছি। ৫২টা গ্রামে গিয়েছি”। তবে খোদ তৃণমূল কর্মীর থেকেই এহেন অভিযোগ শুনে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল।
সমস্ত অভিযোগ শুনে সাংসদ বলেন, “আমি তো সব শুনলাম। আমি গিয়ে অভিজিতের সঙ্গে কথা বলব। কেন এমনটা হয়েছে…”। এরপর এদিন হাসপাতালে গিয়েও সাংসদ কথা বলেন। তাঁর সংযোজন, “বিধায়কের আসার কথা ছিল। কেন আসেননি জানি না। ওঁর বাবা অসুস্থ। খোঁজ নিয়ে দেখব”।
যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক। এক সংবাদমাধ্যমে এই বিষয়ে তিনি জানান। “আমি নিয়মিত ব্লকে ব্লকে হাজির থাকি। যে কোনও কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকি”। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ এবং অভিযোগ প্রসঙ্গে বিধায়কের সাফাই, আমরা চেষ্টা করব নতুন যে আবাস যোজনার তালিকা তৈরি হবে, তাতে সবাই যেন সুবিধা পান”।