রাজ্য

‘আমার বাবাও বাম আমলে অনেক অযোগ্যদের চাকরি দিয়েছেন’, নিজের দলের হয়ে দুর্নীতির সাফাই দিতে বামনেতা বাবাকেই টার্গেট উদয়নের

এই মুহূর্তে নিয়োগ দুর্নীতি (recruitment scam) নিয়ে গোটা রাজ্য উত্তাল। শাসক দলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীদের নাম জড়িয়েছে এই নিয়োগ দুর্নীতিতে। এরই মধ্যে আবার বাম আমলে চিরকুটের সুপারিশে চাকরি দেওয়া নিয়ে সিপিএম-কে (CPM) বিঁধছে তৃণমূল (TMC)। এমন আবহে এবার এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। তারা বাবা তথা বামনেতা কমল গুহর আমলে দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করে তিনি বলেন, “আমার বাবাও যখন বাম আমলে মন্ত্রী ছিলেন, তখন বাবাও অনেকগুলি ডিপার্টমেন্টে চাকরি দিয়েছিলেন। দলের ছেলেদের চাকরি দেওয়ার কাজ আগেও হতো, পরেও হবে”।

দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর বাবা কমল গুহ বাম জমানায় কৃষিমন্ত্রী ছিলেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। এই ফরওয়ার্ড ব্লক বামেদেরই শরিক। বাবার হাত ধরেই রাজনীতিতে আসেন উদয়নও। সেই সূত্রেই প্রথমে লাল ঝাণ্ডা হাতে বামেদের হয়েই রাজনীতি করেছেন তিনি।

পরবর্তীতে রাজ্যের পালাবদলের সময় দল বদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হন উদয়ন গুহ। দলনেত্রীও তাঁকে ভোটে লড়ার সুযোগ করে দেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নাটাবাড়ি থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়ে জিততে পারেন নি তিনি। তবে উপনির্বাচনে দিনহাটা থেকে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন উদয়ন।

নানান সময় নানান বিষয়েই মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান তিনি। এবার নিজের বাবাকেই টার্গেট করলেন উদয়ন। বললেন, “দলের লোকদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া নতুন নয়, বাম আমলেও হয়েছে। বাবা ছিলেন মন্ত্রী। তিনি কৃষি, সেচ ও PHE বিভাগে  অনেককে চাকরি দিয়েছেন দিনহাটা, কোচবিহার থেকে। দলের স্বার্থেই সেসব করা হয়েছে। আমিও বহু সুপারিশ করেছি। তাই বলে কি ধরে নিতে হবে তাঁদের চেয়ে বেশি  যোগ্যতাসম্পন্ন  কেউ ছিল না? দেখুন এটা যদি দুর্নীতি হয়, তাহলে বাম আমলেও হয়েছিল, পরেও হবে। তবে এটুকু বলতে পারি, বাবার আমলে কেউ আর্থিক দুর্নীতিতে যুক্ত ছিল না”। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নিজের দলকে সমর্থন করতেই বামেদের কথা তুলে নিজের বাবাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন মন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি তৃণমূলের তরফে দাবী করা হয়েছে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তী পরীক্ষা ছাড়া কলেজের চাকরিতে ঢুকেছিলেন। ১৯৮৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চাকরি করেছেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর বেসিক বেতন ছিল মাসিক ৫৫ হাজার টাকা। এখন পেনশন ভোগ করছেন।

ফিরহাদ উদয়নের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, “ও কী পাগলের মতো বকেছে আমার জানা নেই। চিরকুটে কখনও লোক ঢোকানো যায় না, কমপক্ষে একটা অ্যাপ্লিকেশন লাগে। আগে যখন সার্ভিস কমিশন ছিল না বা নিয়োগের নিয়ম ছিল না তখন স্কুলগুলোর পরিচালন কমিটি শিক্ষক নিয়োগ করত”।

debangon chakraborty

Related Articles

Back to top button