কোনও দলত্যাগ ঘটেনি, মুকুল রায় বিজেপিরই বিধায়ক, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ
দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানা চলার পর আজ, শুক্রবার মুকুল রায়ের দলত্যাগ মামলায় সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে মুকুল রায় দলত্যাগ করেন নি। তিনি যে দলত্যাগ করেছেন, এর কোনও প্রমাণ নেই। এই নিয়ে বিজেপির তরফে বারবার অভিযোগ করা হলেও, এর সপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে পারে নি অভিযোগকারীরা, এমনটাই জানান বিধানসভার অধ্যক্ষ।
আজ, শুক্রবার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক কোনও দলত্যাগ করেন নি। বিজেপির তরফে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, তা খারিজ করে দেন তিনি। এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। তবে এর আগে এই বিষয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন যে এই মামলায় প্রয়োজনে তারা সুপ্রিম কোর্টে যাবে।
অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে মুকুল রায়ের দলত্যাগ সংক্রান্ত কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে বিধায়ক হয়ে মুকুল রায় যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, এর কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই কারণে তিনি এই মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। গত ১১ই জুন শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছিলেন যে বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায় দল বদল করেছেন। তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন জানান শুভেন্দু। এই সংক্রান্ত ৬৪ পাতার একটি পিটিশনও দেন তিনি।
এরপর গত ১৬ই জুলাই থেকে মামলার শুনানি শুরু হয়। গত ২৮শে জানুয়ারি ১২ নম্বর শুনানি হয় এই মামলার। দু’পক্ষের তরফেই সওয়াল-জবাব হয়। শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী জানান যে তৃণমূলের অফিসিয়াল দেখা জাচ্চজে যে ২০২১ সালের ১১ই জুন মুকুল রায় তৃণমূল ভবনে দাঁড়িয়ে দল পরিবর্তন করেছেন। সেই সংক্রান্ত যে নানান ভিডিও ও ছবি প্রকাশিত হয়েছে, সেইসবকেই হাতিয়ার করেছিল বিজেপি।
কিন্তু শুনানি পর্বে মুকুল রায়ের আইনজীবী বারবার দাবী করেন যে কোনও দলবদল হয়নি। জানানো হয় যে সেই সময় মুকুল রায়ের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল। এই কারণে তিনি অন্য একটি রাজনৈতিক দলের দফতরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তা শুধুমাত্র সৌজন্যের কারণেই। তিনি কোনও পতাকা তিনি হাতে নেননি।
এও বলা হয়ে যে নানান সময় সংবাদমাধ্যমের সামনে মুকুল রায় বিজেপির হয়েই কথা বলেছেন। এই সমস্ত তথ্য প্রমাণেই মুকুল রায়ের ‘দলত্যাগ’ ঢাকা পড়ে গেল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। অন্যদিকে সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিজেপি এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছে।
এদিন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পিটিশনার যথার্থ তথ্যপ্রমাণ দাখিল করতে পারেননি”। এই মামলায় ৩৫ পাতার রায় দেন অধ্যক্ষ। এ বিষয়ে তৃণমূলের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অধ্যক্ষের রায়কে মেনে নিতে হবে। অধ্যক্ষ সবদিক বিবেচনা করে রায় দিয়েছেন। তাঁর রায়কে সমর্থন করি”।