ধরতে হবে আন্তর্জাতিক বাজার! গতে বাঁধা বাংলার ঐতিহ্য বালুচরী শাড়িকে আকর্ষণীয় করার পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর

বর্তমানে প্রশাসনিক কাজের জন্য বাঁকুড়ায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল সেখান থেকেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন তিনি। বাঁকুড়া বিষ্ণুপুর এর সুযোগ সুবিধা অসুবিধা সব বিষয়ে আধিকারিকদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে নিচ্ছেন তিনি। আর এরই মাঝে প্রশাসনিক বৈঠকে বাঁকুড়ার প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছ থেকে বিষ্ণুপুরের তথা সমগ্র ঐতিহ্যমন্ডিত বালুচরী শাড়ির ব্যবসার খোঁজও নিলেন তিনি। পরামর্শ দিলেন আন্তর্জাতিক বাজারকে ছুঁতে হলে এই শাড়িকে আরও আকর্ষণীয় করতে হবে। এদিন তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকে বালুচরি শাড়ির নকশায় নতুনত্ব আনার কথা বলেন।
গতকাল বাঁকুড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেশ রণংদেহী মেজাজে পাওয়া যায়। তারই মাঝে আধিকারিকদের কাছ থেকে বিষ্ণুপুরের বালুচরী শাড়ির ব্যাপারে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের সচিব রাজেশ পান্ডের কাছে এ সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘বালুচরি শাড়ি কিন্তু আমাদের ‘জিআই’ প্রোডাক্ট। আগে বালুচরীর সিল্ক কড়কড়ে ছিল। আমি অনেক বলে বলে হালকা করিয়েছি। কারণ, এখনকার মেয়েরা হালকা শাড়ি পরতেই বেশি ভালবাসে।’
আর এরপরই বিষ্ণুপুরের চিরকালীন ঐতিহ্য বালুচরীর নকশা পাল্টানোর পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘প্রায় প্রতিটি বালুচরী শাড়িতে একই ধরনের নকশা থাকে। এই নকশা পাল্টাতে হবে। নকশায় নানারকম বৈচিত্র নিয়ে এসো। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে হবে।’ তখনই সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব রাজেশবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, কলকাতায় একটি ডিজাইন সেন্টার করা হয়েছে। সেখান থেকে প্রতি বছর নতুন নকশা পাচ্ছেন তাঁতিরা।
বিষ্ণুপুরের কারিগরদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর আরও পরামর্শ, আন্তর্জাতিক বাজারে যে সব নকশার কদর রয়েছে সে সম্পর্কে তাঁতিদের ধারণা দিতে হবে। তা হলে এই শাড়ি বিদেশে বিক্রি করা সম্ভব। একইসঙ্গে এদিন জেলার মৃৎশিল্প, ডোকরা শিল্পের দিকে নজর দিতে আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য শাসিকা যে তাঁদের জন্য এত ভাবেন তা দেখে আপ্লুত বিষ্ণুপুর বালুচরী শিল্পীরা।