‘নুন্যতম ক্ষতি হয়েছে বাংলার’, জগদীপ ধনখড়ের ট্যুইটে ক্ষিপ্ত গোটা বাংলা
একেতেই তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত রাজ্যের শাসক দল। পদ্মপাল বলে অভিহিত হন প্রায়ই। কিন্তু এত বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরেও তাঁর প্রতিক্রিয়া দেখে এবার বাংলার সাধারণ মানুষও তার ওপর চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ। আমফানের তুমূল ক্ষতিকর প্রভাব দেখেও প্রায় ২৪ ঘন্টা পরে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের একটা টুইটে “নুন্যতম ক্ষতি” (বানান অপরিবর্তিত) লেখাতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল বাঙালি।
রাজভবনে আসার পর থেকেই জগদীপ ধনখড়কে নিয়ে যেভাবে চর্চা হচ্ছে, তা রীতিমতো চমকপ্রদ। যাদবপুর হোক বা করোনা, রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত এখন প্রায় প্রতিদিনের বিষয়। কিন্তু এদিনের একটি ট্যুইটই আগুনে ঘি ঢেলে দিল!
রাজ্যপাল এ দিন ট্যুইট করে লেখেন, ‘আমফানের প্রকোপে যে প্রাণহানি ঘটেছে বা সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে তার জন্যে আমি মর্মাহত। আমি গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত বিভিন্ন এজেন্সির সাথে সম্পর্ক রেখে চলেছিলাম। তাদের দায়িত্ববোধের ফলে নুন্যতম ক্ষতি হয়েছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)। রাজ্যপালের এই ট্যুইটের পর গর্জে ওঠে নেটিজেনরা। এর আগে জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে ‘বিজেপির সঙ্গে নৈকট্য’ বা ‘রাজভবনকে বিজেপির পার্টি অফিস হিসেবে গড়ে তোলার’ অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। কিন্তু কালকের ধ্বংসলীলার সব ছবি যখন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মেইনস্ট্রিম মিডিয়াতেও প্রচারিত সেখানে ক্ষতির পরিমাণ খুব কম করে দেখানোর জন্য রাজ্যপালের প্রতি রীতিমত বিতৃষ্ণা উগরে দিচ্ছেন নেটিজেনরা। আমফানের এই ধ্বংসলীলার সময় বাংলাকে নিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্যের বিরোধিতায় একজোট হয়েছে তৃণমূল-বাম, সাধারণ মানুষও।
যদিও পরে একাধিক ট্যুইটে রাজ্যপাল লেখেন, ‘তবু এটি একটি বিনাশকারী ছাপ রেখে গেছে যা বহু দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। এখন প্রত্যেককে সর্বব্যাপী ত্রাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’ (বানান অপরিবর্তিত)। সেইসঙ্গে নিজের তরফে পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘সুপার সাইক্লোন আমফান ব্যাপক ও অভূতপূর্ব ক্ষতি করেছে। অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে আছেন মানুষজন। ঞো গুলি সমেত সকলকে অনুরোধ করছি রিলিফের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এর পক্ষ থেকে রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি যাতে প্রধানমন্ত্রী সত্ত্বর যথাযোগ্য পদক্ষেপ করতে পারেন।’ (বানান অপরিবর্তিত)
এখানেই শেষ নয়, ধনখড়ের ট্যুইট, ‘মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে যোগাযোগে আছি যাতে স্বাভাবিক পরিষেবা আবার শুরু করা যায়। এইরকম কঠিন সময় একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা খুব জরুরি।’ (বানান অপরিবর্তিত)।
কিন্তু এতে চিঁড়ে ভেজেনি। বাঙালির মনে বড় অভিঘাত তৈরি করেছে বাংলার ‘নুন্যতম ক্ষতি হয়েছে’ লেখা ট্যুইটটি। রাজ্যের অভিভাবকের কেন্দ্র ঘেঁষা স্বভাব কিছুতেই মানতে পারছেন না বাঙালি।