এত তাড়াতাড়ি? ‘টাইম টু প্যাক আপ’! মদনের ফেসবুকীয় পোস্টে গুঞ্জন শুরু বাংলার ভোট বাজারে
বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে যে হারে লোকজন দলবদল করছে তাতে কোনও কিছুই আর অস্বাভাবিক ঠেকছে না।
দীর্ঘদিনের গুঞ্জনকে সত্যি করে মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেছেন শাসকদল তৃণমূলের অন্যতম স্থপতি শুভেন্দু অধিকারী। সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে শাসকদলের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন অনেক নেতা বিধায়করাই।
আর এসবের মাঝেই এবার ফেসবুকে প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রের পোস্ট ঘিরে জল্পনা শুরু হলো বঙ্গ রাজনীতিতে। গত শনিবার নিজের ফেসবুক পোস্টে মদন মিত্র লেখেন, ‘টাইম টু প্যাক আপ’। আচমকা এই দুঁদে নেতার ‘পাততাড়ি গুটিয়ে নেওয়া’ মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই গুঞ্জন ছড়ায়। অনুরাগীদের অনেকেই তাঁর আগাম পদক্ষেপের ইঙ্গিত বলে এই মন্তব্যের ভিন্ন তাৎপর্য খুঁজতে উৎসুক হয়ে ওঠেন। উড়ে আসে গুচ্ছ গুচ্ছ প্রশ্ন বাণ।
তবে নিজের ছড়ানো উত্তেজনাকে প্রশমিত করতে ময়দানে নামতে হয় খোদ মদন মিত্র কেই। জল্পনা উসকে দিয়ে মদন মিত্র প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আরে প্যাকেট বোঝ, প্যাক আপ বোঝ না?’
নিজস্ব মেজাজে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের করা বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন তিনি। বাংলার রাজনীতিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই নেতা বর্তমানে তৃণমূলের নামী সাংসদ, নেতা-মন্ত্রীদের খানিকটা খোঁচা দিয়েই বলে দিলেন, “যাঁরা জনপ্রিয় বলে পদগুলো পেয়েছেন, তাঁদের ছ’বছর পর দেখব। রাজনীতির ময়দান থেকে যদি সরে যান, তাহলে তারপরও কতখানি জনপ্রিয় থাকেন।” আকারে ইঙ্গিতে যেন বলে দিতে চাইলেন, আগামী বছর নির্বাচনের আগে দলের উচিত তাঁকেও আপন করে নিয়ে বিশেষ পদ দেওয়ার। কারণ দলের জন্য যেমন তিনি পরিচিতি পেয়েছেন, তেমনই তিনিও এই দলকে অনেক কিছু দিয়েছেন। অনেক জয় এনে দিয়েছেন। দলের সঙ্গে কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। ভবিষ্যতেও করবেন না।আর প্যাক-আপ? লাইভে উপস্থিত নেতা বলেন, প্যাক আপ মানে শুধুই কোনও কিছু শেষ করে ফেলা? এভাবে আসলে প্যাক আপ মানে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে আসরে নামা। বুঝিয়ে দেওয়া তৃণমূলের ক্ষমতা ও জনপ্রিয়তা কতখানি। আর ২০২১ নির্বাচনে সেই দলকেই জেতানো। অর্থাৎ দল তাঁকে কোনও পদ না দিলেও আগামী নির্বাচনে নিজের দলকে জেতাতে সবরকম প্রয়াস করবেন, সেটাই বুঝিয়ে দিলেন মদন মিত্র।
তবে সম্প্রতি মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করার শুভেন্দ্র অধিকারী কে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। বলেন, “আমিও চপারে চড়িনি। তাই বলে কি জনপ্রিয় হইনি?” সেই কথার রেশ টেনেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দল তাঁর দিক থেকে সাময়িকভাবে মুখ ফিরিয়ে নিলেও তিনি আজীবন এই দলের বিশ্বস্ত সৈনিক হিসেবেই কাজ করে যাবেন। ‘লোভে’ পা দেবেন না। মদন মিত্রর কথায়, “অনেকে ভাবেন আমার হয়তো এখন দুঃখ হয়, রাগ হয়। কিন্তু জানবেন, মদন মিত্র সেই আগের মতোই রয়েছে। যে প্রয়োজনে প্রাণ দেবে, কিন্তু বেইমানি করবে না।”