লজ্জাজনক! দলিত হয়ে ঈশ্বরের প্রসাদ খাওয়ার ‘অপরাধের’ জের, ছোট্ট বালককে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর পুরোহিতের
আমরা যতই মুখে নিজেদের আধুনিক বলে দাবী করি না কেন, যতই সাজপোশাক বা আবভাবে আমরা আধুনিকতার ছোঁয়া আনি না কেন, এখনও আমাদের দেশে জাতপাতের ভেদাভেদ সম্পূর্ণরূপে মুছে যায়নি। আজ একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও ভারতের নানান কোণায় দলিত ছেলেমেয়েদের তথাকথিত ‘উচ্চবর্ণের’ মানুষজনদের হাতে মানসিক বা শারীরিকভাবে নির্যাতিত হতে হয় প্রতিনিয়ত। সমাজে মেলামেশা, খাওয়াদাওয়া সব কিছুর মধ্যেই একটা পর্দা এখনও রয়েছে।
আর এবার এর প্রমাণ মিলল আরও একবার। ভগবানের প্রসাদ খাওয়ার ‘অপরাধে’ অকথ্য শাস্তি পেতে হল এক বালককে। তার একটাই ‘অপরাধ’ ছিল যে সে দলিত হয়ে ঈশ্বরকে নিবেদন করা বাদাম খেয়েছিল। সেই ঘটনা চোখে পড়ে যায় ওই মন্দিরের পুরোহিতের। তা দেখেই তীব্র রেগে যান তিনি। আর ওই বালককে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার জন্য মারধর শুরু করেন।
এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। জানা গিয়েছে, গত ৮ই সেপ্টেম্বর সাগর জেলার একটি মন্দিরে ঠাকুরের প্রসাদে বাদাম দেওয়া হয়েছিল। সেই বাদামই এক মুঠো খেলে ফেলে স্থানীয় এক দলিত বালক। অভিযোগ, তা দেখতে পান রাকেশ জৈন নামে মন্দিরের পুরোহিত। এরপরই ওই বালককে প্রথমে তীব্র ভর্ৎসনা করতে থাকেন তিনি। পরে বালককে গাছে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
এই গোটা ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেন এক ব্যক্তি। মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় এই ভিডিওটি। এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে এক বালককে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। নাগাড়ে কেঁদেই চলেছে ওই বালক। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুরোহিতকে সে বারবার তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আর্জি জানাচ্ছ। কিন্তু সেদিকে কোনও আমলই দিচ্ছেন না ওই পুরোহিত। এরপর বালককে মারতে থাকেন তিনি।
A very terrible accident happened in Sagar, Madhya Pradesh, the temple's Pandit Rajesh Jain took a Dalit child hostage, then brutally beat him up. FIR has been registered under the SC ST Act against Pandit but till now he has not been arrested.#Brahminism pic.twitter.com/w7GrI5a6sb
— The Dalit Voice (@ambedkariteIND) September 10, 2022
বিজ্ঞাপনওই বালকের কাছ থেকে গোটা ঘটনার কথা জানতে পারে তার পরিবার। এরপরই অভিযুক্ত ওই পুরোহিতের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তারা। বালকের পরিবারের দাবী, বাদাম খাওয়ার জন্য নয়, নিচু জাত হওয়ার কারণেই ছোটো বাচ্চাটির উপর এই অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন