বাংলা ভাষার প্রতি লতা মঙ্গেশকরের ছিল অগাধ টান, বাড়িতে শিক্ষক রেখে শিখেছিলেন বাংলা ভাষা
আজ গোটা দেশ শোকে স্তব্ধ। রবিবাসরীয় সকালেই মেলে এক দুঃসংবাদ। সুরের সম্রাজ্ঞী, কোকিল-কণ্ঠী লতা মঙ্গেশকর প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে ৯২ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর। তাঁর এই মৃত্যুতে গোটা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। লতাজির প্রয়াণে ভারতীয় সংস্কৃতি জগতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হল, তা পূরণ হওয়ার নয়।
আজই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে লতা মঙ্গেশকরের। সুরের নাইটিঙ্গলের প্রয়াণে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নানান বার্তা দিয়েছেন নানান মহলের তারকা থেকে সাধারণ মানুষ। মূলত হিন্দি গান দিয়ে নিজের গানের যাত্রা শুরু করলেও বাংলা ভাষার প্রতি লতাজির ছিল অগাধ ভালোবাসা। বাঙালি ছিলেন না, কিন্তু তবুও এই ভাষাকে আপন করে নিয়েছিলেন তিনি। প্রায় ২০০-র কাছাকাছি বাংলা গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। একাধিক বাঙালি সুরকার-গীতিকারের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।
জানা যায়, বাংলা ভাষা শেখার জন্য বাড়িতে শিক্ষক রেখেছিলেন লতাজি। তাঁর নাম ছিল বাসু ভট্টাচার্য। যেমন-তেমন ভাবে দায়সারা ভাবে শিক্ষা নয়, বরং তিনি যাতে বাংলা লিখতে-পড়তে পারেন, তেমনটাই ছিল অভিপ্রায়।
বাংলা ভাষায় মোট ১৮৫টি গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। ১৯৫৬ সালে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে গাইলেন ‘প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে’। সেই গানের মধ্যে দিয়েই বাংলা গানে আত্মপ্রকাশ ঘটে তাঁর। এরপর সেই বছরই ভূপেন হাজারিকার সুরে গান ‘রঙ্গিলা বাঁশিতে’ যা অলটাইম হিট গান।
‘মধুমতি’ ছবিতে ‘আজা রে পরদেশী’ গানটির জন্য জন্য সেরা মহিলা প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জেতেন লতা মঙ্গেশকর। এই গানের সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সলিল চৌধুরী। লতা মঙ্গেশকরের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। সুরকারের বিরলতম প্রতিভার কথা বহুবার বলেছেন নিজের সাক্ষাৎকারে বলেছেন লতাজি।
‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি,’ ‘সাত ভাই চম্পা,’ ‘নিঝুম সন্ধ্যায়,’ ‘চঞ্চল মন আনমনা,’ ‘আষাঢ় শ্রবান’, ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে’, ‘না যেওনা’, ‘ওগো আর কিছু তো নয়’-র মতো নানান সুপারহিট বাংলা গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। সুধীন দাশগুপ্ত, হেমন্ত এবং সলিল চৌধুরীর মতো সুরকারদের সঙ্গে কাজ করেছেন একাধিকবার কাজ করেছেন তিনি।