শুভ ভাবনা! বই-রং পেন্সিলে স্বপ্ন বুনবে পরিযায়ীদের সন্তানরা! উদ্যোগে পুলিশের অপারেশন আনন্দ!
আজকের দিনটা শুধুমাত্র তাদের জন্যই। প্রতিবছর একটা উদ্দেশ্য নিয়েই এই দিনটা পালন করা হয় যাতে মানুষের মধ্যে শিশুশ্রম বিরোধী ভাবনা ঢোকানো সম্ভব হয় এবং শিশুশ্রম সম্পূর্ণ হারে দেশ থেকে নির্মূল করা যায়। উদ্দেশ্য অত্যন্ত সৎ হলেও বাস্তব উপেক্ষা করা যায়না। আর বাস্তব বলছে
প্রতিবছর শিশু শ্রমের সঙ্গে জুড়ে যায় আরও কতগুলো নাম।
ওরা শিশু শ্রমিক। আবার পরিযায়ী শ্রমিকের সন্তান হলে তকমা জুটছে পরিযায়ী শ্রমিকেরও।
১২ জুন শিশুশ্রম বিরোধী বিশ্ব দিবস পালিত হয়। কিন্তু তাতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যাটা কমে কি? উত্তর হয়ত না। কিন্তু চেষ্টা তো করা যেতেই পারে। সেই চেষ্টাই করল রাজ্য পুলিশ, হাওড়া জেলা জিআরপি ও ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশন।
করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজ্য থেকে এখনও শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনগুলিতে বাংলায় ফিরছেন শ্রমিকরা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবার তেমনই ডানকুনি স্টেশনে এসে পৌঁছায় একটি শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন। সেই ট্রেনেই ছিল ৩০০ জন পরিযায়ী পরিবারের শিশু। তাঁদের হাতেই এইদিন তুলে দেওয়া হল ড্রয়িং বই, রং পেন্সিল, খাবারের প্যাকেট ও একটি বুকলেট যেখানে শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে স্তরে স্তরে সাজানো হয়েছে গঠনমূলক ভাবনা।
উপহার পেয়ে যারপরনাই খুশি শিশুরা। তাই উপহার-খাবার পেয়ে ওদের মুখের আনন্দের কথা ভেবেই হয়ত এই পদক্ষেপের নাম রাখা হয়েছিল ‘অপারেশন আনন্দ’। সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাওড়া জেলা জিআরপি-র ডেপুটি এসপি অনুসূয়া দত্ত বণিক, হাওড়া জেলা জিআরপি-র ডিএসপি শিশির কুমার মিত্র, ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশনের ডিরেক্টর অফ অপারেশনস, কলকাতা সাঝি ফিলিপ, জাস্টিস মিশনের ডিরেক্টর অফ অপারেশনস, কলকাতার সিনিয়ন ম্যানেজার পল্লব কর্মকার, জাস্টিস মিশনের ডিরেক্টর অফ অপারেশনস, কলকাতার সিনিয়র লিড রবীন পাল।
সাঝি ফিলিপের কথায়, ‘এই কঠিন সময় শিশুরাই সমাজের সবচেয়ে স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে রয়েছে। করোনা, লকডাউন ও তার ফলে পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারগুলির সমস্যা হয়েছে বিস্তর। এই শিশুগুলির হাতে তাই আমরা কিছু উপহার, বুকলেট তুলে দিলাম। ওরা সচেতন হলেই তো সমাজের মঙ্গল। শিশু পাচার ও শিশু শ্রম রুখতেই হবে সকলকে মিলে।’
পরিসংখ্যান অবশ্য চমকে ওঠার মতো। সারা পৃথিবীতে এই মুহূর্তে প্রায় ১৫২ মিলিয়ন শিশুশ্রমিক রয়েছে। সংখ্যাটা বাড়ছে লাফিয়ে। একটা ‘অপারেশন আনন্দ’ হয়ত সেই প্রবণতা এক ধাক্কায় রুখে দিতে পারবে না, কিন্তু দিকে-দিকে এমন ‘অপারেশন’ করা হলে একদিন শৈশবের জন্যে শুধু উন্মুক্ত থাকবে, সেই আশাটুকু অন্তত করা যেতেই পারে।