নানান বিরোধী দলের যৌথ বিবৃতিতে নাম নেই তৃণমূলের, একক অস্তিত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে একঘরে হচ্ছে না তো তৃণমূল?
সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে পেগাসাস ইস্যু নিয়ে রাজ্যসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এর জেরে শীতকালীন অধিবেশন থেকে নানান বিরোধী দলের ১২ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। আর এর প্রতিবাদে ফের জোট বেঁধেছে নানান বিরোধী দলগুলি।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে রয়েছে কংগ্রেস, এনসিপি, সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, আকম আদমি পার্টি, সিপিআই, সিপিএম, জেডিএস, টিআরএস, এমডিএমকে, আইইউএমএল, প্রমুখ। কিন্তু এর মধ্যে নেই তৃণমূল। তাহলে কী তৃণমূলকে ছাড়াই জোট বাঁধার পরিকল্পনা চলছে?
বিরোধীদের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে নাম নেই তৃণমূলের। তারা আলাদাভাবে সাংবাদিক বৈঠক করল। সাসপেন্ড হওয়া দুই সাংসদ দোলা সেন ও শান্তা ছেত্রীকে পাশে নিয়েই সুখেন্দু শেখর রায় বলেন যে তাদের বলতে দেওয়ার সুযোগই দেওয়া হয়নি। এই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যৌথ বিবৃতিতেও বলা হয়েছে এই ঘটনা অগণতান্ত্রিক। তাহলে তৃণমূলকে আলাদা করে সাংবাদিক বৈঠক করতে হচ্ছে কেন?
আজ এই প্রসঙ্গে সুখেন্দু শেখর রায়কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “যারা ওই যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে, তারা আমাদেরে ডাকেনি””। সুখেন্দু শেখরের এই বক্তব্য যদি সত্যি হয়, তাহলে কি তৃণমূলকে আলাদাই রাখতে চাইছে বিরোধী দলগুলি? বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে গিয়ে কি জাতীয় রাজনীতিতে ‘বন্ধু’ হারাচ্ছে তৃণমূল?
সম্প্রতি মমতা নিজের দিল্লি সফরে স্পষ্টতই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে চলতে তিনি খুব একটা আগ্রহী নন। সাংবাদিকরা মমতাকে প্রশ্ন করেছিলেন তিনি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে কবে দেখা করবেন? প্রশ্ন শুনে চটে গিয়ে মমতা বলেন, “দিল্লি এলেই তাদের সঙ্গে দেখা করতে হবে এইরকম কোনও নিয়ম আছে নাকি? এটা কি কোনও সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা? আমি দেখা করার জন্য কোনও সময় চাইনি”।
বলে রাখি, নানান সময় তৃণমূলকে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে। এই ঘটনা মোটেই ভালোভাবে নেন নি বেশ কিছু কংগ্রেস নেয়াত। তাদের বক্তব্য, কংগ্রেসকে দুর্বল দেখিয়ে, কংগ্রেসের উপর আক্রমণ করে তৃণমূল বিজেপিকেই সাহায্য করছে। তবে সেদিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।
তৃণমূলের বক্তব্য, গোটা পশ্চিমবঙ্গ দেখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এদিকে কংগ্রেসের সঙ্গে আম আদমি পার্টির সম্পর্কও খুব একটা ভালো নয়। তবে এই যৌথ বিবৃতিতে তাদেরও দেখা গেল কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে। তৃণমূলই একা। তাহলে কী একক অস্তিত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে সত্যিই একঘরে হয়ে যাচ্ছে ঘাসফুল শিবির?